Recent News of WikiBangla ধূমকেতু নিউজ ম্যাগাজিন

Home » , , , , , » রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়- ছাত্রলীগের দামি পিস্তল ও কিছু সস্তা জীবন by ফারুক ওয়াসিফ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়- ছাত্রলীগের দামি পিস্তল ও কিছু সস্তা জীবন by ফারুক ওয়াসিফ

বিশ্বজিতের খুনিরা হাড়কেপ্পন ছিল। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতাদের মতো দামি পিস্তল দিয়ে বিশ্বজিৎকে মারতে পারত তারা।
তা না করে চাপাতি দিয়ে কোপাতে কত কষ্টই না করতে হয়েছিল ছেলেগুলোকে। চাপাতি সস্তা ও দেশি, পিস্তল দামি ও বিদেশি। রাবির ছাত্রলীগ নেতা ইমন ও নাসিমরা অ্যানালগ থেকে ডিজিটালে প্রমোশন পেয়েছেন বলে তাঁদের অভিনন্দন। তাতে এঁদের দামও গেছে অনেক বেড়ে। দামটা বুঝবেন যদি তাঁর পিস্তলের দামটা জানেন। এক বৈধ অস্ত্র বিক্রেতা ও বৈধ অস্ত্র ব্যবহারকারীর মারফত জানতে পারলাম, যে পিস্তল দিয়ে ইমন গুলি করছিলেন, তার ব্র্যান্ডের নাম বেরেটা টমক্যাট। দাম তিন থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা। ছোট কিউট স্মার্ট একটা অস্ত্র। এটা দিয়ে বেশি দূরে গুলি করা যায় না। তবে এর ক্যারিশমা অন্য জায়গায়। সুকুমার রায় বেঁচে থাকলে এটা দেখে বলতেন, ‘এতটুকু যন্ত্র হতে এত শব্দ হয়!’।

অস্ত্রটা বাংলাদেশে এসেছে নাকি মাত্র তিন মাস হলো। অবশ্য অবৈধভাবে এর আগেও আসতে পারে। স্মার্ট পিস্তল হাতে ইমনকে ড্যাশিং দেখালেও কাজের বেলায় তিনি ঠনঠনা। গুলিবাজির ভিডিও দেখলে যে কেউ-ই বুঝবেন, অস্ত্রের প্রশিক্ষণ ঠিকমতো হয়নি। হাত কাঁপে, বুলেটভরা ম্যাগাজিন ভুল করে খুলে ফেলে। নিজের গুলির শব্দে নিজেই ভয়ে চমকে ওঠে। অন্য কারণের পাশাপাশি এই আনাড়িপনার জন্যও তাকে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা যুক্তিযুক্ত হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কুখ্যাত ক্যাডার এবং পরে সাংসদ হওয়া অভি নাকি চা-সিগারেট খেতেন না হাত কাঁপবে বলে। ছাত্রশিবিরের বন্দুকবাজদেরও তুখোড় নামডাক আছে। ছাত্রলীগের ক্যাডাররা অভিকে না পেলে শিবিরের ক্যাডারদের কাছ থেকে অস্ত্র চালনা শিখতে পারে।

তিন লাখ সাড়ে তিন লাখ টাকার অস্ত্র যে চালায়, তাকে চালাতে দলের কত টাকা লাগে?  সেই টাকা কোথা থেকে জোগাড় হয়? পিস্তলের চোখ দিয়ে দেখলে ইমন লাখো টাকার সেলিব্রিটি ক্যাডার। আর যাঁদের তাক করে সে গুলি করেছে, তাঁরা ‘সামান্য’ কয় টাকার বেতন বাড়ানো নিয়ে আন্দোলন করা ‘সস্তা’ ছাত্রছাত্রী। বলা হয়, সস্তার তিন অবস্থা। এই সস্তা শিক্ষার্থীরা ডাইনিংয়ের পানিপ্রধান ডাল আর কাঁকরময় ভাত খান, গাদাগাদি করে চৌকিতে ঘুমান আর মাস চালানো নিয়ে টাকার টানাটানিতে ভোগেন। তো ইমনদের পক্ষে এঁদের কীভাবে সম্মান করা সম্ভব?

ইমনের যাঁরা বস, তিনি ভিসি হতে পারেন, এলাকার এমপি-মন্ত্রী-নেতা হতে পারেন। তাঁরা অনেক খানদানি লোক। তাঁরা ছাত্রলীগের মতো দুর্দান্ত মেধাবী সংগঠন পোষেন। এদের দিয়ে ক্যাম্পাসগুলোতে দখলদারি-জমিদারি পত্তন করেন। ছাত্রলীগ আছে বলেই ছাত্রছাত্রী ও বেয়াড়া শিক্ষকদের প্রজা বানিয়ে রাখতে পারেন। আন্দোলনের স্পর্ধা দেখালে পুলিশ ও ছাত্রলীগ লেলিয়ে প্রজাদের সস্তা পিঠে ছররা গুলির লাল আলপনা এঁকে দেন। পত্রিকা আর টিভিতে ইমনদের পিস্তলের বাহাদুরির পাশাপাশি এ রকম কিছু প্রজার ছিদ্রময় পিঠের ছবি এসেছে। অবশ্য গুলি-বন্দুক কিনতে সরকারকে কত টাকা ব্যয় করতে হয়, তা আমরা জানি না। সেই টাকায় কতজনের পড়ালেখার খরচ রাষ্ট্র দিতে পারত, তা-ও জানা নেই। পুলিশের অস্ত্র, জলকামান, টিয়ার গ্যাস ইত্যাদি কিনতে তো টাকার অভাব হয় না; অভাব হয় কেবল বিশ্ববিদ্যালয় চালাতে।

এই গল্প জমিদার ও প্রজার গল্প, এই গল্প শিকার ও শিকারির গল্প। শিকারির হাতে অস্ত্র থাকবে, শিকারেরা রক্তাক্ত হবে; এটাই নিয়ম। ক্যাম্পাসগুলোতে দেখেছি, শিক্ষার্থীরা সরকারদলীয় সংগঠনকে ভয় পান। কখনো সেই সংগঠন ছাত্রলীগ; কখনো তা হয় ছাত্রদল-ছাত্রশিবির। তার পরও এদের সঙ্গেই বাস করতে হয় হলে, বিচরণ করতে হয় একই ক্যাম্পাসে। শিকারির চোখ দিয়ে, জমিদারের চোখ দিয়ে ছাত্রছাত্রী ও ছাত্রবান্ধব শিক্ষকদের দেখতে কেমন লাগে জানা নেই। কিন্তু শিকার হিসেবে, প্রজা হিসেবে জানি, ওই সব জমিদার ও শিকারিকে শিক্ষার্থীরা অন্তরের অন্তস্তল থেকে ঘৃণা করেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, রাজশাহীর ঘটনায় দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন। গত বছর জগন্নাথ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নির্যাতন করেছিল, তাদের কারোরই কি শাস্তি হয়েছে? জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জুবায়েরকে যারা কুপিয়ে হত্যা করেছিল, তাদের কি আটক করে আদালতে তোলা হয়েছে? এসব আশ্বাস মনকে ক্লান্ত করে। শ্রদ্ধা-ভক্তি উঠে যায়। বিশ্বজিতের হত্যাদৃশ্য সমগ্র দেশবাসীর হূদয়ে যে হাহাকার আর ধিক্কারের জন্ম দিয়েছিল, তার ধাক্কায় খুনিদের বিচার হয়েছে। হয়তো প্রকাশ্যে গুলি করার দৃশ্য দেখে নিন্দার ঝড় ওঠায় ইমনেরাও আটক হবে। কিন্তু যে ছাত্রলীগকে মাস্তানি, খুনোখুনি, মাদক ব্যবসায় জড়িত থাকতে দেখা যায়, যে সংগঠনের হাতে রয়েছে ইমনের পিস্তলের চেয়েও ভয়ংকর অস্ত্র, সেই ছাত্রলীগ নিয়ে আমরা কী করব? ছাত্রশিবিরের সন্ত্রাসকে আমরা ঘৃণা করেছি, ছাত্রলীগের বেলায় কি সেই ঘৃণার মনকে ঘুমিয়ে রাখব?

একটি দেশে দুর্বৃত্ত ক্ষমতা আর প্রশাসনিক স্বৈরতন্ত্র কতটা উদগ্র হতে পারে, ক্যাম্পাসগুলো তার উদাহরণ। ক্যাম্পাসের বাইরে নিপীড়ক ক্ষমতা অনেক চতুরালি জানে। দরকার মোতাবেক তারা নরম ও গরম হয়। কিন্তু ক্যাম্পাসের সরকারদলীয় ক্যাডাররা কাটা রাইফেলের নলের মতো সর্বদাই গরম। প্রতি মুহূর্তে তাদের ক্ষমতা দেখাতে হয়, নইলে কর্মীরা অনুগত থাকবে না, প্রতিপক্ষ সুযোগ নেবে আর ছাত্রছাত্রীরা হয়ে উঠবে ‘বেয়াদব’। তাদের হাঁটাচলা, মোটরসাইকেল দৌড়ানো, হম্বিতম্বি, গুলিবাজি—সবই তাদের রাজনীতির ট্রেডমার্ক। এগুলো তারা নিজেদের জন্য করে, দলের জন্য করে, ওপরঅলাদের দাপট জারি রাখার জন্য করে, নেতা হওয়ার জন্য করে। তাই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করলে ছাত্রলীগ ভেড়ার পালে নেকড়ের মতো ঝাঁপিয়ে পড়বে এটাই তো স্বাভাবিক। একবিংশ শতাব্দীতে বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পাক-ব্রিটিশ আমলের মতো লাঠি-টিয়ার-গুলিতে লুটিয়ে পড়লে অবাক হওয়ার কিছু নেই। এ দেশে জনগণের অধিকারকে দাপুটে রাজনীতি আর স্বৈরাচারী প্রশাসন কী মূল্য দেয়, তা যাঁরা ভুলে গেছেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের যন্ত্রণা দিয়ে তা তাঁরা বুঝে নিতে পারেন।

ইমনরা একা নয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মহোদয়ের নির্দেশ ছাড়া ছাত্রলীগ বা পুলিশ গুলি করতে পারত না। তাঁর নির্দেশ ছাড়া ছাত্রলীগের অস্ত্রবাজদের বিরুদ্ধে মামলা করাও যাবে না। তিনি চেয়েছেন বলেই নির্যাতিত শিক্ষার্থীদের বাঁচাতে সাহসের সঙ্গে দাঁড়ানো পাঁচ তরুণ শিক্ষকের বিরুদ্ধে উসকানির অভিযোগ ওঠানো হচ্ছে। সরকার-প্রশাসন জানে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় বা সর্বজনের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলো সর্বদাই বাহান্ন, উনসত্তর, নব্বইয়ের মতো উত্থান ঘটানোর সম্ভাবনা রাখে। এ ধরনের গণ-আন্দোলন কখনোই পুলিশ দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না।  জোট বাঁধা শিক্ষার্থীরা পুলিশকে ভয় পায় না। তা ছাড়া সার্বক্ষণিক নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারির জন্য অনেক পুলিশ লাগবে। কথায় কথায় পুলিশ ব্যবহার করলে মিডিয়ায় শোরগোল উঠবে, মানবাধিকারের প্রশ্ন উঠবে। ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ বা ছাত্রদল বা ছাত্রশিবিরের এমবেডেড সন্ত্রাসীদের কৌশলের সঙ্গে চালাতে পারলে এসব হুজ্জত এড়ানো যায়। তাই অন্য সব ইমন ও সম্ভাব্য ইমনদের ভয় নেই। বহিষ্কারের নামে তাদের আইনি বিচার থেকে দায়মুক্তি দেওয়া চলবে; যেমন বহিষ্কারের দায়মুক্তি ভোগ করে চলেছে জুবায়েরের খুনি ছাত্রলীগের ক্যাডাররা। তাই অন্যায় ক্ষমতার অন্যতম খুঁটি ছাত্রলীগও ‘দায়মুক্ত’ থাকবে।

কিন্তু সেই সব শিক্ষার্থীর কী হবে? যাঁরা আন্দোলন করে মার খেয়েছেন, এখন আবার ‘ছাত্রশিবিরের’ ভাঙচুরের দায়ে যাঁদের নামে অভিযোগ গঠন করা হচ্ছে? ইতিমধ্যে ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্রফ্রন্ট, ছাত্র ফেডারেশন ও বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর নেতা-কর্মীসহ ৫০ জন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে দুটি মামলা করা হয়েছে। সেই পাঁচ তরুণ শিক্ষকেরই বা কী হবে, যাঁরা ছাত্রলীগের ক্যাডারদের সামনে বুক চিতিয়ে বলেছিলেন, ‘ওদের মারতে হলে আমাদের বুকের ওপর দিয়ে যেতে হবে।’ সেই পাঁচ শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের উসকানি দেওয়ার অভিযোগের তদন্ত হবে। গত জরুরি অবস্থার সময়ও শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদ করায় রাবির অন্য পাঁচ শিক্ষককে জেলে পাঠানো হয়। এঁরা আছেন বলে নীতি নামক জিনিসটা এখনো চূড়ান্তভাবে লাটে ওঠেনি।

ফারুক ওয়াসিফ: সাংবাদিক ওলেখক।

bagharu@gmail.com

Written by : Nejam Kutubi - Describe about you

"And still even today I hear the mournful tune of the Sanai"Say,Valiant,High is my head!I am the rebel,the rebel son of mother-earth!Ever-high is my head.O travellers on the road of destruction,Hold fast Ur hammer,pick up Ur shovel,Sing in unison And advance.We created in the joy of our arms.We shall now destory at the pleasure of our feet.‘O Lord,For eight years have I lived And never did I say my prayers And yet,did U ever refuse me my meals for thet?Ur mosques And temples are not meant for men,Men heve no right in them.The mollahs And the Priests Heve closed their doors under locks And keys.’Comrades, Hammer away at the closed doors Of those mosques And temples,And hit with Ur shovel mightily.For,climbing on their minarets,The cheats are today glorifying Selfishness And hypocrisy.And creatr a new universe of joy And peace.Weary of struggles,I,the great rebel,Shall rest in quiet only when I find The sky And the air free of the piteous groans of the oppressef.Only when the dattlefields are cleared of jingling bloody sabres Shall I,weary of struggles,rest in quiet,I,the great rebel.I am the rebel-eternal,I raise my head beyond this world,High,ever-erect And alone!.

Join Me On: Facebook | Twitter | Google Plus :: Thank you for visiting ! ::

0 comments:

Post a Comment