Recent News of WikiBangla ধূমকেতু নিউজ ম্যাগাজিন

Home » , , » গ্রাম বাংলার হারানো ঐতিহ্য : গরুর গাড়ি ।। জহির রহমান

গ্রাম বাংলার হারানো ঐতিহ্য : গরুর গাড়ি ।। জহির রহমান

ওকি গাড়িয়াল ভাই
কত রব আমি পন্থের দিকে চাহিয়ারে...
যে দিন গাড়িয়াল উজান যায়,
নারীর মন মোর ঝুরিয়া রয় রে।
ওকি গাড়িয়াল ভাই
হাকা গাড়ি চিলমারীর বন্দরে রে...

দূর থেকে বাতাসে ভেসে আসছে গান। কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে কে গাচ্ছে এ গান! কে আবার? গাড়োয়ান ভাই। গাড়োয়ান ভাই গরুর গাড়ি চালায়। ছুটে চলে দূর-দূরান্তে, গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে। মাল নিয়ে ছুটে চলে বন্দর থেকে বন্দরে, এক গঞ্জ থেকে আরেক গঞ্জে। দূরের যাত্রাপথে সুরেলা কণ্ঠে ভাওয়াইয়া গান ধরে গাড়োয়ান ভাই।


বাতাসে গাড়ি চলার কোঁ-ওঁ-ওঁ-ওঁ শব্দ ভেসে আসছে। বেড়ার ফাঁকে দাঁড়িয়ে দেখে বাড়ির বউ। তাই তো গরুর গাড়িই যাচ্ছে! পর্দার ফাঁকে দেখা যাচ্ছে বড় বাড়ির বউ। নিশ্চয়ই নাইওর যাচ্ছে বাপের বাড়ি। ছোট ছোট ছেলেপুলেরা গরুর গাড়ির পেছন পেছন ছুটে চলছে। গরুর গাড়ি বাতাসে ছড়িয়ে দিচ্ছে কোঁ-ওঁ-ওঁ-ওঁ আওয়াজ।

পল্লী বধূরা মাথার গোমটা পরিয়ে মিষ্টি হেসে ঘরের জানালায় দাঁড়িয়ে মনে নানা পরিকল্পনার চিত্র আঁকে। এখন সবকিছু স্মৃতি। বাস্তবের সলিল সমাধি হয়ে গেছে সেই বহুকাল আগে থেকে।

শত বছর আগের এমনই ছিল গ্রাম বাংলার অবস্থা। যেখানে নৌকা চলত না, গরুর গাড়িই ছিল সেখানকার একমাত্র যানবাহন। গঞ্জ, নদী-বন্দর, ছোট শহর, হাট-বাজার সব জায়গায় সচল ছিল গরুর গাড়ি। মালপত্র আনা নেওয়া হতো গরুর গাড়িতে। অভিজাত পরিবারের সদস্যরা যাতায়াত করতো গরুর গাড়িতে। আত্মীয়ের বাড়ি বেড়াতে যেত গরুর গাড়ি চড়েই। বাড়ির বাইরে গরুর গাড়ির আওয়াজ শুনেই বোঝা যেত অতিথি এসেছে। গরুর গাড়ি এসেছে যখন তখন নিশ্চয়ই এসেছে কোনো বিশেষ অতিথি!
গরুর গাড়ি সম্পূর্ণরূপে আমাদের দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি। আমাদের দেশের বাঁশ, কাঠ ব্যবহার করা হয় গরুর গাড়ি তৈরিতে। গরুর গাড়িতে খুব বড় বড় দুইটি চাকা থাকে। চাকা দুইটি কাঠের তৈরি। কাঠের চাকায় পুরানো থাকে লোহার রিং। তার উপর আবার রবারের টায়ারও পরনো হয়। কাঠের চাকায় খোদাই করে নানান নকশা করা হয়।
কাঠমিস্ত্রি ও কামারের যৌথ চেষ্টায় গরুর গাড়ির চাকা তৈরি হয়। গরুর গাড়িও পল্লীবাংলার এক ধরনের লোকশিল্প; কুটির শিল্পও বটে। গরুর গাড়ির চাকা তৈরি করে এক বিশেষ শ্রেণীর কারিগর। চাকা কিনে নিয়ে মূলত গায়ের মিস্ত্রি বা লোকেরা নিজেরাই গরুর গাড়ি তৈরি করেন। গরুর গাড়ি মূলত বাঁশের তৈরি। তবে কোনো কোনো অংশ যেমন- চাকা তৈরি হয় বাবলা কাঠ দিয়ে। চাকার কেন্দ্রস্থলে বিয়ারিং থাকে। দুটি চাকা একটা দণ্ড দিয়ে যুক্ত করা হয়। এর উপরেই থাকে গরুর গাড়ির সব ভার। চালির মতো বাঁশের তৈরি অংশকে বলে চালি। চালির পেছন দিক চওড়া, সামনের দিক চাপা। পুরো চালির দু'পাশে থাকে মজবুত দুটি বাঁশের দণ্ড। সামনে এ দুটি দণ্ড একটি চণ্ডি কাঠ দিয়ে যুক্ত থাকে, যাকে জোয়াল বলে। চণ্ডি কাঠের সামনে থাকে  বিষখিলি, জোয়াল ও কানখিল। জোয়াল গরুর কাঁধে তুলে দেওয়া হয়। দু'পাশে দুটি গরু জোয়াল কাঁধে গাড়ি টেনে চলে। যাত্রীবহনের গাড়িতে নৌকার মতো ছই থাকে। ছইয়ের ভেতরে চালির ওপর পাটি বা বিছানা পেতে যাত্রীরা বসে থাকে।

গাড়িতে ব্যবহৃত গরুর পায়ের খুরে দেয়া হয় এক ধরনের লোহার পাট্টা। পাট্টা লাগিয়ে দেয়ার দুইটি কারণ রয়েছে। এক-গরুর পায়ের খুরে লোহার পাট্টা লাগিয়ে দেয়ার কারণে গরু রাস্তায় চলাচলে গায়ে শক্তি পায়। এ পাট্টার কারণে পা রাস্তায় তেমন একটা সিলিপ করে না। দুই, পায়ে পাট্টা লাগানোর কারণে গরুর পায়ের খুর ক্ষয় হয় না। স্থায়ীভাবে পাট্টা লাগানোর ব্যবস্থা নেই বলে ৪/৫ দিন পর পর গরুর পায়ের খুরে পাট্টা লাগিয়ে দিতে হয়। একটি গরুর গাড়িতে পায় দুই টন মালামাল বহন করা যায়।
এখন যন্ত্রচালিত যানবাহনের যুগ। মালামাল বহনের জন্য রয়েছে ট্রাক, লরি, মালগাড়ি। মানুষের যাতায়াতের জন্য রয়েছে মোটরগাড়ি, রেলগাড়ি, বেবী ট্যাক্সি, রিকশা ইত্যাদি। মানুষ এখন খুব একটা প্রয়োজন না হলে গরুর গাড়ি ব্যবহার করে না। আধুনিক যানবাহনের ভিড়ে গরুর গাড়ি অনেকটা হারিয়ে গেছে। তারপরও মিটিমিটি করে এর অস্তিত্ব টিকে আছে।
গরুর গাড়ির একটি সুবিধা হলো এতে কোনো জ্বালানি লাগে না। ধোঁয়া হয় না। পরিবেশের কোনো ক্ষতি করে না। এটি খুবই পরিবেশ সহায়ক একটি যানবাহন।
রহিম মিয়া একজন সৌখিন গরুর গাড়ির মালিক। গ্রামীণ আবহে সে গরুর গাড়ি চালাতো। মনের অদম্য সাহস এবং উপস্থিত বুদ্ধিমত্তার জোরে রহিম মিয়া তার গাড়ির গরুগুলোকে আগলে রাখতো। গরুর ঘাড়ে যখন গাড়ির জোয়াল চাপিয়ে রহিম মিয়া তার গরুর গাড়ি নিয়ে ছুটে চলতেন তড়িৎ গতিতে। নানা ধরণের মালামাল বহনে তার গাড়ির তুলনা ছিলো না। স্থানীয় মানুষজন তাকে রহিম মিয়াকে আগেই বলে রাখতো মাল বহনের জন্য। সততা এবং সাহসের জোরে রহিম মিয়া সবার কাছে ছিল প্রিয় ব্যক্তি। চিরন্তন সত্য মৃত্যু তাকেও একদিন নিয়ে যায় না ফেরার দেশে। আজ রহিম মিয়া নেই, নেই তার বাহারি গরুর গাড়িও।

ঐতিহ্যের ধারকবাহক এই গরুর গাড়ি একদিন বইয়ের পাতায় জায়গা করে নেবে। বর্তমান প্রজন্মের কেউ গরুর গাড়ি চিনবে না।
গরুর গাড়ি ঐতিহ্যেরই একটা অংশ। গ্রামীণ পরিবেশে গরুর গাড়ির প্রচলন থাকলেও বর্তমানে তেমন একটা চোখে পড়ে না। ইতিহাস-ঐতিহ্যের অনেক কিছু আমরা ক্রমান্বয়ে হারাচ্ছি। কালের গতিধারায় উন্নয়নের গতি থেমে নেই। আমাদের জীবন থেকে হারাচ্ছে এরকম নানা ঐতিহ্য। পরিকল্পনা অনুসারে মোকাবেলা করা গেলে কিছুটা হয়তো রক্ষা পেতো। এজন্য দরকার সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সফল উদ্যোগ গ্রহণ এবং  তা বাস্তবায়ন। এভাবে করা গেলে গণ-হারে ঐতিহ্য ধ্বংস না-ও হতে পারতো।


Written by : Nejam Kutubi - Describe about you

"And still even today I hear the mournful tune of the Sanai"Say,Valiant,High is my head!I am the rebel,the rebel son of mother-earth!Ever-high is my head.O travellers on the road of destruction,Hold fast Ur hammer,pick up Ur shovel,Sing in unison And advance.We created in the joy of our arms.We shall now destory at the pleasure of our feet.‘O Lord,For eight years have I lived And never did I say my prayers And yet,did U ever refuse me my meals for thet?Ur mosques And temples are not meant for men,Men heve no right in them.The mollahs And the Priests Heve closed their doors under locks And keys.’Comrades, Hammer away at the closed doors Of those mosques And temples,And hit with Ur shovel mightily.For,climbing on their minarets,The cheats are today glorifying Selfishness And hypocrisy.And creatr a new universe of joy And peace.Weary of struggles,I,the great rebel,Shall rest in quiet only when I find The sky And the air free of the piteous groans of the oppressef.Only when the dattlefields are cleared of jingling bloody sabres Shall I,weary of struggles,rest in quiet,I,the great rebel.I am the rebel-eternal,I raise my head beyond this world,High,ever-erect And alone!.

Join Me On: Facebook | Twitter | Google Plus :: Thank you for visiting ! ::

0 comments:

Post a Comment