Recent News of WikiBangla ধূমকেতু নিউজ ম্যাগাজিন

Home » , , , , » সরল গরল- ছয় থেকে আট সপ্তাহের স্বাধীনতা by মিজানুর রহমান খান

সরল গরল- ছয় থেকে আট সপ্তাহের স্বাধীনতা by মিজানুর রহমান খান

২৫ ফেব্রুয়ারির দুপুর। সুপ্রিম কোর্টের অ্যানেক্স ভবনের ১৬ নম্বর বিচারকক্ষের লাগোয়া বারান্দায় উপচে পড়া ভিড়। তাঁরা এসেছেন দূরদূরান্ত থেকে।
এক জায়গায় দেখলাম, পুরো একটি পরিবার বসে আছেন। জমি নিয়ে মারামারি। ঠাকুরগাঁও থেকে আগাম জামিন নিতে এসেছেন। প্রশ্ন হলো, তাঁরা গ্রাম থেকে কেন রাজধানীতে ছুটে এসেছেন? অধিকাংশ জামিনাদেশে লেখা আছে, ছয় থেকে আট সপ্তাহ পরে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নিতে হবে এবং তখন জামিন দেওয়ার ক্ষেত্রে আদালত স্বাধীন থাকবেন।
তার মানে সুপ্রিম কোর্ট স্বীকার করছেন এবং সুপ্রিম কোর্টের বাঘা বাঘা আইনজীবী, যাঁরা মুহূর্তে মক্কেলদের আগাম জামিনাদেশ পাইয়ে দিতে সক্ষম হচ্ছেন, তাঁরাও স্বীকার করবেন, এখানে শুভংকরের ফাঁকি আছে। এক-এগারোর পর লাখ টাকা এমনকি কোটি টাকা ফিয়ের জামিনের গল্পও বাতাসে ভেসেছে। অত টাকা তো সাধারণ মানুষের নেই। গ্রামের মানুষেরা কি ঠকছেন? কতটা? আইনজীবীরা তাঁদের ত্রাতা?
সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ এফ হাসান আরিফের সঙ্গে কথা হলো। তাঁকে মিনিটে জামিনের সমর্থক আঁচ করি। বলি, সরকারে নেই তাই! বললেন, না আমি অ্যাটর্নি জেনারেল থাকতেও কখনো জামিনের বিরোধিতা করিনি। তবে কেন মানুষ হাইকোর্টে আসছেন, সেটা অনুসন্ধানযোগ্য বলে মনে করেন তিনি। মওদুদ আহমদ মিনিটে জামিনের বিষয়ে মন্তব্য করতে নারাজ। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আদালতের স্বাধীনতা দেখেন। বললেন, বঙ্গবন্ধুর আমলে আদালতের ওপর চাপ ছিল না। রক্ষীবাহিনীর কর্মকাণ্ডকে বেআইনি ঘোষণা করে বিচারপতি দেবেশ ভট্টাচার্যের দেওয়া মাইলফলক রায় স্মরণ করলেন। জামিনপ্রার্থীদের ভিড় প্রশ্নে, বিশেষ করে নিম্ন আদালতের ওপর সরকারের প্রচণ্ড চাপের ওপরই জোর দিলেন তিনি।
সরকার নিয়ন্ত্রণ করে তাই নিম্ন আদালতে মানুষ যদি জামিন নিতে না-ই যান, তাহলে সেই একই আদালত কী কারণে ছয় থেকে আট সপ্তাহ সময়ের পর স্বাধীনভাবে জামিন দিতে পারবেন? আট সপ্তাহের ব্যবধানে অভিযুক্তকে আবার নতুন করে ছোট আদালতের আইনজীবী ধরতে হবে। জামিনের দরখাস্ত করতে হবে। তাহলে লাভটা কী? এটাই ফাঁকি।
আমরা জানলাম, বড় আদালতের ছোঁয়াই কাফি। হাইকোর্ট যেহেতু জামিন দিয়েছেন, তাই নিম্ন আদালত ভরসা করতে পারেন। তাহলে কিন্তু আমজনতা বুঝবেন, ওটা আইনের শাসন নয়, মৃতসঞ্জীবনী সালসা। নিম্ন আদালতের বিচারকের বুকের ছাতি ফোলানোর বটিকা।
সুতরাং আইনবিদ ও আইনজীবীরা একে আগাম জামিন বলবেন। কিন্তু আমি বলব না। আসলে হাইকোর্টের অব্যাহত গণজামিন প্রমাণ করছে যে, বিচার বিভাগ পৃথক্করণ মুখ থুবড়ে পড়েছে। নিম্ন আদালত সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের মুঠোবন্দী থাকতেও জামিনের এমন হিড়িক দেখা যায়নি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৯ সালে দুই দিনে এক হাজার ২০০ জামিন নিয়ে মন্তব্য করে আদালত অবমাননার দায়ে অভিযুক্ত হয়েছিলেন। তাঁর সেই উক্তি অসতর্ক ছিল মানি। কিন্তু ১৫ বছরের ব্যবধানে সেই রায়টি পড়ে মনে হলো, বড় মুখ নিয়ে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগ সেদিন যেভাবে শেখ হাসিনার প্রতি উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন, সেই বড় মুখ আজ অবশিষ্ট নেই। ওই রায়টি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারা পুনর্মূল্যায়নের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলাম।
১৯৯৮ সালের ২৫ ও ২৬ আগস্ট দুই দিনে ১৫৫টি জামিন দিয়েছিলেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ। শেখ হাসিনা তা ভুল করে এক হাজার ২০০ বলেছিলেন। সেদিন সংখ্যাগত ভ্রান্তিকেই বড় করে দেখা হয়েছিল, আদালত নিজেদের ওজস্বিতায় সংবেদনশীল ছিলেন। কিন্তু শেখ হাসিনার বক্তব্যের চেতনা আজও প্রাসঙ্গিক। তিনি বলেছিলেন, ‘ওই ঘটনা প্রধান বিচারপতিকে জানালে কেবল বেঞ্চ পরিবর্তন করেন, অন্য ব্যবস্থা নেননি, ব্যবস্থা নিলে জুডিশিয়ারি অনেক দায়দায়িত্ব থেকে মুক্তি পেত এবং জুডিশিয়ারি সম্পর্কে মানুষের মনে কোনো সন্দেহ দেখা দিত না।’ আজও প্রাসঙ্গিক বলছি এ কারণে যে, ‘ওই ধরনের ঘটনা’ অব্যাহত আছে বরং আরও গুরুতরভাবে চলছে। শেখ হাসিনা ১৯৯৯ সালে প্রধান বিচারপতির উদ্দেশে বলেছিলেন, যদি তদন্ত করা হতো, ব্যবস্থা নেওয়া হতো, তবে জুডিশিয়ারি অনেক দায়দায়িত্ব থেকে মুক্তি পেত। ২০০৯ সালে তদন্ত হলো। ব্যবস্থা নেওয়া হলো না। জনমনের সন্দেহ ঘুচল না।
মিনিটে একটি আগাম জামিন প্রশ্নে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বললেন, ‘আমি গভীরভাবে হতাশ। কয়েকটি বেঞ্চে আইন কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালনে অনাগ্রহী। কারণ, তাঁরা রাষ্ট্রপক্ষে কথা বলার সুযোগ পান না।’
২০০৯ সালে যখন দুজন বিচারক ৩৮ সেকেন্ডে একটি আগাম জামিন দিলেন, তখনো কেবল সংশ্লিষ্ট বিচারকদের এখতিয়ার রহিত করা হয়েছিল। অ্যাটর্নি জেনারেল নিশ্চিত জানালেন, জামিনাদেশের অনিয়ম খতিয়ে দেখতে সুপ্রিম কোর্টের গঠিত তদন্ত প্রতিবেদন হারিয়ে গেছে।
তাই বলছিলাম, শেখ হাসিনার ‘অতিরঞ্জিত’ উক্তি অপ্রাসঙ্গিক হয়নি। অপ্রাসঙ্গিক হয়ে গেছে আগের সরকারকে দায়ী করার বিষয়টি। ২০০৯ সালে ওই তদন্ত কমিটি দেখেছিল, এক দিনে কার্যতালিকায় এক হাজার ১৪২টি মামলা আদেশের জন্য ছাপা হয়েছিল। ১৩টি কার্যদিবসে এক হাজার ৩৭২টি আগাম জামিন এবং ৬৮৯টি অন্যান্য আদেশ দেওয়া হয়েছিল। তবে ওই বেঞ্চ এক দিনে সর্বোচ্চ ২৪৮টি আগাম জামিন দেন। আর এখন এক দিনে ৩০৭টি আগাম জামিনের আদেশ মিলেছে। তাহলে এটিও তদন্তের দাবি রাখে।
১৯৯৯ সালে আপিল বিভাগ বেশ গর্বের সঙ্গে যুক্তি দিয়েছিলেন যে, ‘হাইকোর্ট ব্যবস্থা সম্পর্কে যাঁদের জ্ঞান আছে, তাঁরাই জানেন দুই দিনে একটি বেঞ্চের এক হাজার ২০০ জামিন দেওয়া অবাস্তব। বিচারকেরা যদি ওই হারে মামলা নিষ্পত্তি করতেন, তাহলে তো মামলা জটই থাকত না।’ কিন্তু ১৯৯৯ সালে যা তাদের কথায় ‘ফিজিক্যালি ইম্পসিবল’ ছিল। তা ‘ফিজিক্যালি পসিবল’ হচ্ছে। তাই প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে বিবৃতি দাবি করি। কারণ, আপিল বিভাগ বলেছিলেন, সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে আগাম জামিন সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর অসন্তোষ ব্যক্ত করার অধিকার আছে। আমরা মনে করি, এই অধিকার প্রয়োগের এখন উত্তম সময়। কারণ, একাধিক বেঞ্চে ‘বাছবিচারহীন আগাম জামিন’ চলছে।
আগাম জামিন নিয়ে আমাদের উচ্চ আদালতের দুটি টেস্টামেন্ট আছে। ওল্ড টেস্টামেন্ট লেখা হয়েছিল ১৯৯৯ সালের ২৫ মে। আগাম জামিন নিয়ে শেখ হাসিনাকে ভর্ৎসনা করার ৮১ দিন পর। তখন প্রধান বিচারপতি এ টি এম আফজাল লিখেছিলেন, ‘আগাম জামিন দেবেন হাইকোর্ট। জেলা জজ ও দায়রা আদালত নন।’ রাষ্ট্র ঠিক উল্টো বলেছিল। সে কারণেও কি আগাম জামিন পেতে আজ জনস্রোত আছড়ে পড়ছে উচ্চ আদালতে? আপিল বিভাগ যদি রাষ্ট্রের সঙ্গে একমত হতেন, তাহলে শেখ হাসিনাকে তিরস্কার করে দেওয়া মার্চের রায় টেকে না। কারণ, শেখ হাসিনার উল্লিখিত হাইকোর্ট যে ৩৬৭ জন অভিযুক্তকে আগাম জামিন দিয়েছিলেন, তাঁরাও নিম্ন আদালত এড়িয়েছিলেন।
ওল্ড টেস্টামেন্টের সবই ভালো। এটুকু ছাড়া। আইন কিন্তু বলছে, আগাম জামিন ছোট-বড় উভয় কোর্ট দিতে পারেন।
মাহমুদুল ইসলাম ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল। তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন, ‘আগাম জামিন নিতে সরাসরি হাইকোর্টে আসা যাবে না। আগে জেলা ও দায়রা জজের কাছে যেতে হবে।’ অবশ্য এটাও শতভাগ গ্রহণযোগ্য নয়। তবে ওল্ড টেস্টামেন্টের একটা সংশোধনী লাগবে। কারণ, এতে নিম্ন আদালতকে খাটো করা আছে। বলা হয়েছে, আগাম জামিন দিতে তারা সাহস পাবেন না।
তবে ওল্ড টেস্টামেন্ট কিন্তু বাছবিচারহীন জামিনদানকে জুডিশিয়াল এক্সট্রাভ্যাগাঞ্জ বলেছিলেন। বাংলা একাডেমির অভিধানমতে এটা অসংযত বিচারিক আচরণ। হাইকোর্ট নিম্ন আদালতকে নিজের শরীরের অংশ ভাবেনই না। আবার হাইকোর্টের স্বাধীনতাও যথেষ্ট প্রশ্নবিদ্ধ। নিম্ন আদালতে সরকারের হস্তক্ষেপ বিবেচনায় মিনিটে মিনিটে জামিনদান এবং ৫৬১(ক) ধারার আওতায় নিম্ন আদালতের বিচার-প্রক্রিয়া বাছবিচারহীনভাবে স্থগিত করে দেওয়ার অনুশীলনকে আমরা বিচার বিভাগের স্বাধীনতা জ্ঞান করতে পারব না। নিম্ন আদালত, তুমি কার শরীরের অংশ—সরকারের, না সুপ্রিম কোর্টের? জামিন ও স্থগিতাদেশ (স্টে) প্রদানের চেতনা যে তেলে (সংবিধানগত) দাউ দাউ করে জ্বলে, সেই তেলে নিম্ন আদালতকে নির্বাহী বিভাগের রাহুমুক্ত করার সাংবিধানিক, আইনগত, সংবিধিবদ্ধ ও এমনকি আপিল বিভাগের রায়গত কর্তব্যবোধ টিম টিম করেও জ্বলে না।
একশ্রেণীর বেঞ্চ অফিসার দুর্নীতিগ্রস্ত। অ্যাটর্নি জেনারেল আমাকে আদালত প্রশাসনে ‘রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি’র কথা বলেছিলেন। তদুপরি অবাক হলাম। ২৭ ফেব্রুয়ারি একটি বিচারকক্ষের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। এক তরুণ আইনজীবী এক জ্যেষ্ঠ আইনজীবীর সঙ্গে কথায় কথায় ২০ হাজার টাকার একটি বান্ডেল বের করলেন। ঈষৎ মলিন নোটগুলো ৫০০ টাকার। এই অর্থ খরচ করে আগাম জামিনের দুটি আবেদন তিনি কার্যতালিকায় ছাপাতে চান।
জামিনপ্রতি আইনজীবীরা মাথাপিছু ১০ হাজার টাকা ফি নিলে সাড়ে ৫০০ আবেদনে এক হাজার লোক জামিন পেলে তাঁদের কেবল ফি খরচা দাঁড়ায় এক কোটি টাকা। এক হাজার মানুষের অনধিক আট সপ্তাহের স্বাধীনতার দাম এক কোটি টাকা। একে কি বলব না ঘোর অমাবস্যার ‘জামিনার্থনীতি’।
৬ জুন ২০১০ নিউ টেস্টামেন্ট লেখেন বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক। আগে হাইকোর্ট নিম্ন আদালতকে জামিনবান্ধব নির্দেশনা দিতেন। এরপর সেটা বন্ধ হয়েছে। তবে উভয় টেস্টামেন্ট সংশোধনের দরকার আছে। নিউ টেস্টামেন্টে রুল দেওয়া বন্ধের নির্দেশনাটি গ্রহণযোগ্য নয়। বিধিবদ্ধ আইন করতে ওল্ড টেস্টামেন্টের নির্দেশনা আইন কমিশন এখনই বিবেচনায় নিতে পারে। বাছবিচারহীন আগাম জামিনের বিরুদ্ধে উভয় টেস্টামেন্টে অবশ্য কঠোর হুঁশিয়ারি আছে। হাইকোর্টের তা না মানা সংবিধান লঙ্ঘন। ২০০৯ সালের তদন্তের আলোকে ব্যবস্থা চাই। না পারলে অন্তত প্রতিবেদনের প্রকাশনা চাই। যেকোনো বাছবিচারহীন আগাম জামিনের তদন্তপূর্বক আশু প্রতিকার দাবি করি। (শেষ)


মিজানুর রহমান খান: সাংবাদিক।
mrkhanbd@gmail.com

Written by : Nejam Kutubi - Describe about you

"And still even today I hear the mournful tune of the Sanai"Say,Valiant,High is my head!I am the rebel,the rebel son of mother-earth!Ever-high is my head.O travellers on the road of destruction,Hold fast Ur hammer,pick up Ur shovel,Sing in unison And advance.We created in the joy of our arms.We shall now destory at the pleasure of our feet.‘O Lord,For eight years have I lived And never did I say my prayers And yet,did U ever refuse me my meals for thet?Ur mosques And temples are not meant for men,Men heve no right in them.The mollahs And the Priests Heve closed their doors under locks And keys.’Comrades, Hammer away at the closed doors Of those mosques And temples,And hit with Ur shovel mightily.For,climbing on their minarets,The cheats are today glorifying Selfishness And hypocrisy.And creatr a new universe of joy And peace.Weary of struggles,I,the great rebel,Shall rest in quiet only when I find The sky And the air free of the piteous groans of the oppressef.Only when the dattlefields are cleared of jingling bloody sabres Shall I,weary of struggles,rest in quiet,I,the great rebel.I am the rebel-eternal,I raise my head beyond this world,High,ever-erect And alone!.

Join Me On: Facebook | Twitter | Google Plus :: Thank you for visiting ! ::

0 comments:

Post a Comment