Recent News of WikiBangla ধূমকেতু নিউজ ম্যাগাজিন

Home » , , , , » কার্লোস মুসসিও সায়েন্স-পেনঞা- লাতিন আমেরিকায় প্রথম রবীন্দ্র-অনুবাদক by রাজু আলাউদ্দিন

কার্লোস মুসসিও সায়েন্স-পেনঞা- লাতিন আমেরিকায় প্রথম রবীন্দ্র-অনুবাদক by রাজু আলাউদ্দিন

কার্লোস মুসসিও সায়েন্স-পেনঞার নামটি যে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে ১৯১৫ সাল থেকেই জড়িয়ে আছে, আমরা কজনই বা তা জানি।
ইংরেজির কারণে ইয়েটসের কথা, ফরাসি ভাষার কারণে আঁদ্রে জিদের কথা, রুশ ভাষার কারণে বরিস পাস্তেরনাকের কথা, জার্মান ভাষার কারণে হেলেন মায়ারের কথা আর এস্পানিয়ল ভাষার কারণে হুয়ান রামোন হিমেনেথ আর তাঁর স্ত্রী সোনোবিয়ার কথা আমরা জানি। কিন্তু হুয়ান রামোনের পাশাপাশি কার্লোস মুসসিওর নামটিও আমাদের স্মরণ করা উচিত। পূর্বসূরি শিশিরকুমার দাশ এবং শ্যামাপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁদের শাশ্বত মৌচাক: রবীন্দ্রনাথ ও স্পেন গ্রন্থে বলেছিলেন, হুয়ান রামোন আর সেনোবিয়া রবীন্দ্রনাথের প্রথম অনুবাদক এস্পানিয়ল ভাষায়। স্পেনে তাঁদের অনুবাদে রবীন্দ্রনাথের প্রথম বইটি বেরিয়েছিল ১৯১৫ সালের জুলাইয়ে। ঠিক একই বছর আটলান্টিকের অপর পারে, আর্হেন্তিনার বুয়েনস এইরেসের ‘এদিসিওনেস মিনিমাস’ থেকেও বেরিয়েছিল পোয়েমাস (Poemas) নামে রবীন্দ্রনাথের একটি কাব্যগ্রন্থ। এর প্রকাশকাল একই বছর হলেও প্রকাশের মাসটির উল্লেখ নেই। হিমেনেথের আগে নাকি পরে বেরিয়েছে, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবে কৌতুককর ব্যাপার এই যে ভিন্ন দুই মহাদেশের দুটি দেশ থেকে একই ভাষায় দুই অনুবাদকের হাতে রবীন্দ্রনাথ প্রকাশিত হচ্ছেন গ্রন্থাকারে, প্রায় একই সময়ে—মূল লেখক এ সম্পর্কে ছিলেন পুরোপুরি অনবহিত! অবশ্য The Gardener থেকে মাত্র ২৫টি কবিতা নিয়েছিলেন কার্লোস মুসিসও। আয়তনে যদিও কৃশতনু কিন্তু গোটা এস্পানিয়ল ভাষায় এটি প্রথম বইয়ের গৌরব অর্জন না করলেও অন্তত লাতিন আমেরিকায় এটাই যে প্রথম রাবীন্দ্রিক কিরণ ছড়িয়ে দেওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করেছে তা পুরোপুরি নিশ্চিত। বইটি বেরোবার পরের বছর মাদ্রিদ থেকে প্রকাশিত নুয়েত্রো তিয়েম্পো পত্রিকার ১৯১৬ সালের মার্চ সংখ্যায় বেরিয়েছিল এর একটি অনুকূল আলোচনা, আলোচক ছিলেন হোসে সুবিরা। আলোচনা যে অনুকূল ছিল, তার প্রধান কারণ অবশ্যই রবীন্দ্রনাথ প্রথম প্রাচ্য দেশীয় নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক বলেই। ওই প্রথম পশ্চিম একজন প্রাচ্যের, বিশেষ করে ভারতের বাংলা অঞ্চলের একজন লেখককে এই সম্মানে ভূষিত হতে দেখল। আর এই সম্মানের সঙ্গে যুক্ত ছিল পশ্চিমাদের মনোজগতে প্রাচ্য সম্পর্কে এক অদ্ভুত ধারণার সম্ভ্রম। এই আলোচনাটিতেও তার প্রকাশ আমরা দেখতে পাব: ‘আমাদের পশ্চিমাদের কাছে এত অদ্ভুত সব জিনিসের জন্মদাত্রী ভূখণ্ড বঙ্গদেশ উপহার দিয়েছে একজন কবিও। তবে এই কবি, অন্য সব কবির মতো নন, তিনি মুষ্টিমেয়দের একজন, যিনি কাব্যকলায় দক্ষ, তিনি কঠিনতম শিল্পের, সম্ভবত ‘সবচেয়ে কঠিনতম শিল্পের এক গুরু’—গভীরভাবে নাড়া দেওয়ার মতো।
১৯২৪ সালে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে অনুবাদক কার্লোস মুসসিও সায়েন্স-পেনঞা 
১৯১৩ সালে তাঁকে প্রাপ্য নোবেল পুরস্কার দিয়ে তাঁর বহুমুখী শিল্পীসত্তাকে arbi et orbe (আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক) রূপে অভিষিক্ত করা হয়। পশ্চিমা সভ্যতার কুসংস্কারকে এটা দেখিয়ে দিতে পেরেছে যে কলকাতায় জন্মগ্রহণকারী কবিও গৌরবের মুকুটে ভূষিত হতে পারেন।

ভারতে তিনি কবি হিসেবে এবং ধর্মপ্রাণ ও উদ্দীপক ব্যক্তি হিসেবে সম্মানিত। মরমি ভূষণে আচ্ছাদিত তিনি যখন ব্রাহ্মণ্যবাদ বা আধ্যাত্মিক জীবনের উচ্চতর ধারণাগুলো ব্যাখ্যা করেন, তখন বহু লোক এসে জড়ো হয়।

মরমিবাদ সম্পর্কে বক্তৃতা সংকলন সাধনা (জীবনবোধ), বিভিন্ন নাটক, তাঁর বাবার জীবনী, তাঁর বিভিন্ন কাব্যগ্রন্থ যেমন: গীতাঞ্জলি, দ্য ক্রিসেন্ট মুন এবং দ্য গার্ডেনার গ্রন্থসমূহে মহত্তম এই শিল্পীর বিভিন্ন পর্যায়ের অভিব্যক্তি লক্ষ করা যায়।

মুসিসও সায়েনস্-পেইনঞা সাহেব দ্য গার্ডেনার থেকে পঁচিশটি কবিতা সুনিপুণ দক্ষতায় অনুবাদ করে ‘এদিসিওনেস মিনিমাস’ থেকে একটি গ্রন্থ প্রকাশ করেছেন। অনুবাদকের ভাষায়, কোনো কোনো স্তবককে রবীন্দ্রনাথ যে ধুয়ো দিয়ে অলংকৃত করেছেন, তা জয়দেবের গীতগোবিন্দ দ্বারা উদ্দীপিত বলে মনে হয়। জয়দেব এমন এক গীত রচনা করেছেন, যার সঙ্গে গানের গানের (Cantar de los cantares) মিল লক্ষ করা যায়, তবে তা মরমি আবেগের জন্য নয়, বরং ভালোবাসা বয়ানের ধরনের জন্য।

এই কবিতাগুলো আলো আর মৌলিকতায় পূর্ণ আত্মার যাবতীয় সূক্ষ্মতাকে চূড়ান্ত সারল্যের সঙ্গে প্রকাশ করতে গিয়ে এক প্রশান্ত ঐকতানকে তুলে ধরেছে।’

হোসে সুবিরার এই সপ্রশংস আলোচনা থেকে আমরা বুঝতে পারছি, রবীন্দ্রনাথ এবং মুসিসও উভয়ই নন্দিত হয়েছিলেন এস্পানিয়ল ভাষায় রবীন্দ্রনাথের উদয়লগ্নে। বিশ শতকের একেবারে শুরুর দশক থেকেই লাতিন আমেরিকার মন ও মননকে অল্প যে কজন লেখক-অনুবাদক প্রাচ্যমুখী করেছিলেন, কার্লোস কার্লোস মুসিসও সায়েন্স-পেনঞা তাঁদের অন্যতম।

আর্হেন্তিনার রিও দে লা প্লাতা, যে প্লাতা অঞ্চলে বিক্তোরিয়া ওকাম্পোর আমন্ত্রণে রবীন্দ্রনাথ কয়েকটি দিন আলস্যে কাটিয়েছিলেন স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে, সেখানে ২০ শতকের শুরুতে একদল তরুণ রিও দে লা প্লাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উষ্ণ আবহে বুদ্ধিবৃত্তিক স্ফুলিঙ্গ সৃষ্টি করেছিলেন, মুসিসও ছিলেন সেই তরুণদের একজন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন তখনকার উজ্জ্বল ব্যক্তিত্বদের মধ্যে অনুবাদক ও প্রাবন্ধিক হোয়াকিন বিক্তর গনসালেস (যিনি ১৯১৪ সালে রবীন্দ্রনাথের Hundred poems of Kabir বইটি এস্পানিয়ল ভাষায় প্রথম অনুবাদ করেন। এই বইটির প্রথম সংস্করণের ভূমিকা লিখেছিলেন বোর্হেসের মামাতো ভাই আলবারো মেলিয়ান লাফিনুর। বইয়ের পরের একটি সংস্করণে রয়েছে রুবেন দারিওর একটি ভূমিকা, যদিও সেটি আসলে প্রথমে একটা গ্রন্থালোচনা হিসেবে ১৯১৪ সালের ২১ আগস্টেLa Nacionপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল) এবং আলেহান্দ্রো কর্ন (দার্শনিক ও শিক্ষাবিদ এবং রিও দে লা প্লাতার পঞ্চপাণ্ডব—স্পেনে Cinco Sabios, যার আক্ষরিক অর্থ পাঁচজন জ্ঞানী—তাঁদের একজন তিনি)। আর এই তরুণদের মধ্য থেকেই অল্প সময়ের ব্যবধানে বেরিয়ে এসেছিলেন লাতিন আমেরিকার প্রথম মহান প্রাচ্যবিদ দার্শনিক বিসেন্তে ফাতোনে।
মুসিসও এই তাতানো আবহের মধ্যে টেনে এনেছিলেন লাতিন আমেরিকায় প্রথমবারের মতো ওমর খৈয়াম ও রবীন্দ্রনাথের আত্মাকে, অনুবাদের মাধ্যমে। এটা এক আশ্চর্য কাকতাল যে পেরুর উদ্দেশে রওনা হলেও শেষ পর্যন্ত অসুস্থতার কারণে রবীন্দ্রনাথ যাত্রাবিরতি করলেন এমন এক দেশে, যেখানে প্রথম এস্পানিয়ল অনুবাদে তাঁর কাব্যগ্রন্থ বেরিয়েছিল আর্হেন্তিনা সফরের প্রায় এক দশক আগেই। এ ছাড়া আমাদের মধ্যে অস্বস্তির এক মিহি মেঘ জড়ো হয় এই দেখে যে রবীন্দ্রনাথের চিঠিপত্রে, স্মৃতিকথায়, ডায়েরি এমনকি তাঁর সফরসঙ্গী এলমহার্স্টের লেখায়ও মুসিসওর কোনো উল্লেখ নেই। বিক্তোরিয়া ওকাম্পোর সান ইসিদ্রোর শিখরে রবীন্দ্রনাথ  বই থেকে জানতে পারছি যে ‘বিকেলে ওদিকে শুরু হতো  অভ্যাগতের স্রোত। প্রায়ই নদীর ধারে এক উইলোগাছের নিচে গিয়ে বসতেন আর অতিথিরা তাঁকে ঘিরে বসতেন অর্ধবৃত্তে।’ আরও একটু এগোলেই আমরা আবারও বিক্তোরিয়াকে বলতে শুনি, ‘এ দেশের নির্ভরযোগ্য প্রতিভূদের সঙ্গে কবিকে মিশবার সুযোগ করে দিয়েছিলাম অনেক।’ কিন্তু এই ‘অনেক’দের মধ্যে একমাত্র প্রতিভূ হিসেবে কেবল রিকার্দো গুইরালেদসের কথা তাঁকে বলতে শুনি। এখন জানা যাচ্ছে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে তখন দার্শনিক আলেহান্দ্রো কর্ন, লেখক হোর্হে লুইস বোর্হেস, পেদ্রো এনরিকেস উরেনঞা প্রমুখের মধ্যে দেখা হয়েছিল কার্লোস মুসিসওরও।
পোয়েমাস বইয়ের প্রচ্ছদ 
এ তো হতেই পারে যে খ্যাতির মধ্যগগনে অবস্থানকারী রবীন্দ্রনাথের মনে বা মনোযোগে এসব ‘অভ্যাগতরা’ গভীর কোনো আঁচড় কেটে যায়নি। তা ছাড়া রবীন্দ্রনাথ নিজেও যে সেখানকার লেখক-অনুবাদকদের সম্পর্কে কৌতূহলী ছিলেন, তাও মনে হয় না। ওকাম্পো তো খানিকটা অসন্তোষ আর অনুযোগের সুরে বলেইছিলেন, গুরুদেব ডব্লু এইচ হাডসনের চোখ দিয়ে আর্হেন্তিনাকে দেখতে এসে হতাশ হয়েছিলেন।

রবীন্দ্রনাথের এই হতাশার কারণ হিসেবে ওকাম্পো বলেছিলেন, ‘বেশ বোঝা যায় যে রবীন্দ্রনাথ এ দেশের নিজস্ব অবয়বটি খুঁজে পাওয়ার চেষ্টায় বেশ হতাশ হচ্ছিলেন। হাডসনের বইয়ে (অনেক দূরে, অনেক আগে) যে আর্জেন্টিনার বর্ণনা, ১৯২৪ সালে তার আর কোনো অস্তিত্বই ছিল না।’ (শঙ্খ ঘোষ, ওকাম্পোর রবীন্দ্রনাথ)

আর হাডসনের বাইরে রবীন্দ্রনাথ আর্হেন্তিনাকে বা গোটা লাতিন আমেরিকাকে এক ব্যক্তিগত আবেগের সম্পর্ক থেকে, কেবল বিক্তোরিয়া ওকাম্পের মধ্য দিয়েই দেখেছিলেন। ওকাম্পোকে সে কথা তিনি জানিয়েওছিলেন এক চিঠিতে: ‘For me the spirit of the Latin America will ever dwell in my memory incarnated in your person’ (শঙ্খ ঘোষ, ওকাম্পোর রবীন্দ্রনাথ)।

তবে রবীন্দ্রনাথের কৌতূহল থাকুক বা না থাকুক, আর্হেন্তিনার সে সময়ের তরুণ লেখকদের তীব্র কৌতূহল ছিল রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে। এক আর্হেন্তিনায়ই আমরা দেখতে পাব বিক্তোরিয়া ওকাম্পো, বোর্হেস (পরে অবশ্য রবীন্দ্রনাথ নিয়ে তিনি কোনো উচ্ছ্বাস তো প্রকাশ করেনইনি, বরং যখন প্রসঙ্গ এসেছে, কুটূক্তি করেছেন তীব্র ভাষায়), বোর্হেসের বন্ধু এদুয়ার্দো গনসালেস লানুসা, ফ্রিদা স্চুলৎস দে মান্তোবানি, ওসবালেদা বানাসসিনি, সেসার মাগ্রিনি, হোর্হে ক্রুস, হোয়াকিন বে গনসালেস এবং কার্লোস মুসিসও সায়েন্স-পেনঞা—এঁরা সবাই রবীন্দ্রনাথের লেখা অনুবাদ করেছেন কিংবা রবীন্দ্রনাথের কোনো না কোনো সাহিত্যকর্ম নিয়ে আলোচনা করেছেন।

কিন্তু আর্হেন্তিনাতে মুসিসও সায়েন্স-পেনঞা এঁদের সবার পূর্বসূরি হয়ে আছেন—আর্হেন্তিনায় তো বটেই, এমনকি গোটা লাতিন আমেরিকায়ও—রবীন্দ্রনাথের প্রথম প্রবর্তক হিসেবে। রবীন্দ্রনাথের মোট তিনটি বই তাঁর হাতে অনূদিত হয়েছিল। প্রথম বইটি পোয়েমাস (Poemas) ১৯১৫ সালে প্রকাশিত হয়। মাত্র এক বছরের ব্যবধানে আবার ১৯১৭ সালে নতুন সংস্করণে প্রকাশিত হয় বইটি। দ্বিতীয় বইয়ের নাম ছিল লা কসেচা দে লা ফ্রুতা (La Cosecha de la Fruta), যা বুয়েনস এইরেসের ‘সোসিয়েদাদ কোঅপেরাতিবা এদিতোরিয়াল লিমিতাদা’ থেকে ১৯১৭ সালে প্রকাশিত হয়েছিল। এটিও ছিল রবীন্দ্রনাথের কবিতার সংকলন। এ বইয়ের একটি ভূমিকা লিখেছিলেন হোয়াকিন বিক্তর গনসালেস। এরপর এল হার্দিনেরো (El Jardinero) নামে আরও একটি বই বের হয় বুয়েনস এইরেসের ‘কলেকসিয়ন নোবেল’ সিরিজের অন্তর্গত ‘এদিসিওনেস আর্হেন্তিনা কনদর’ থেকে  ১৯২৪ সালে। এই বইটি আবার ১৯৩৩ সালে সান্তিয়াগো দে চিলে থেকেও বেরিয়েছিল। এ বইয়ের প্রথম সংস্করণে এক পৃষ্ঠাজুড়ে রয়েছে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে মুসিসওর একটি ছবি। সন্দেহ নেই, ছবিটি ১৯২৪ সালেই তোলা। কিন্তু কীভাবে সম্ভব হলো ২৪ সালেই তোলা ছবি একই সালের সংস্করণে অন্তর্ভুক্ত করা? ব্যাপারটা কি এই যে বইয়ের মুদ্রণের কাজ আগে থেকেই চলছিল এবং শেষ পর্যায়ে এসে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে তোলা এই ছবিটি তিনি গ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন?
ছবি যেভাবেই অন্তর্ভুক্ত হোক না কেন এ গ্রন্থে, আমরা জানতে পারছি, মুসিসওর অনুবাদগুলো ছিল খুবই সফল। মুসিসও-গবেষক আক্সেল গাসকেত তাঁর একটি নিবন্ধে জানাচ্ছেন, ‘ওমর খৈয়ামের রুবাইয়াৎ-এর এস্পানিয়ল অনুবাদের লেখক হিসেবে যেমন, তেমনি বাঙালি কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গ্রন্থের অনুবাদক হিসেবেও কার্লোস মুসিসও সায়েন্স-পেনঞার উদ্যোগে সাংস্কৃতিক বিস্তারের জটিল কাজকে বিস্তারিতভাবে দেখাই আমাদের লক্ষ্য। সেই সময় করা খৈয়ামের বিভিন্ন এস্পানিয়ল অনুবাদগুলোর মধ্যে সায়েন্স-পেনঞারটিই সম্ভবত আজ পর্যন্ত বেশি সফল এবং পরিচিত। একই ব্যাপার তাঁর করা রবীন্দ্র অনুবাদগুলোর ক্ষেত্রেও ঘটেছে, যে অনুবাদ ছিল এস্পানিয়ল সাংস্কৃতিক আবহে প্রথম দৃষ্টান্ত।’
সায়েন্স-পেনঞার অনুবাদের সফলতার একটা বড় কারণ এই যে তা মূলানুগ। তাঁর সমসাময়িক রবীন্দ্র-অনুবাদক হুয়ান রামোন হিমেনেথ এস্পানিয়ল ভাষায় রবীন্দ্রনাথের অনুবাদ করেছেন। সেসব অনুবাদ মূলানুগতার কারণে ততটা নয়, যতটা কাব্যিক ব্যঞ্জনার জন্য নন্দিত। মূলানুগতার প্রশ্ন তুলে পরবর্তীকালে হুয়ান রামোনের রবীন্দ্রনাথকে ‘আন্দালুসীয় টেগোর’ও বলেছেন কেউ কেউ। তবে কার্লোস মুসিসও সায়েন্স-পেনঞার হাতে রবীন্দ্রনাথের যে এই পরিণতি ঘটেনি, তার কারণ ওই মূলানুগতা।
হিমেনেথ থেকে উদাহরণ হাজির করে শিশিরকুমার দাশ এবং শ্যামাপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায় বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছেন, কোথায় কীভাবে অনুবাদ মূল থেকে দূরে সরে যাচ্ছে এবং ‘ছন্দস্পন্দের সাম্য’ থাকলেও ‘অর্থের মধ্যে কিছুটা অস্পষ্টতাও এসেছে’।
 সায়েন্স-পেনঞার হাতে রবীন্দ্রনাথ এস্পানিয়ল ভাষায় এই অস্পষ্টতার শিকার হননি বলে আমার ধারণা।
তবে হিমেনেথের সঙ্গে কার্লোস মুসিসওর তুলনার আগে আমাদের স্মরণ রাখতে হবে, যত ‘অস্পষ্টতা’ই থাকুক না, হুয়ান রামোন তাঁর তীব্র সংবেদনশীলতা ও কাব্যগুণ দিয়ে অনুবাদগুলোতে মূলের ক্ষতিকে পুষিয়ে দিয়েছিলেন। আবার এও স্বীকার করতে হবে যে কাব্যগুণে ও মাধুর্যে, ধ্বনিময়তায় ও বিন্যাসের সুষমায় অতুলনীয় হয়ে উঠলেও তা শেষ পর্যন্ত, বাঙালি ও আন্দালুসীয়—এই উভয় আবেগের সুস্নিগ্ধ সৌরভ হয়ে উঠেছিল।
অন্যদিকে কার্লোস মুসিসওর অনুবাদে হয়তো মাতাল করা গীতিমাধুর্য নেই, নেই ইন্দ্রিয়সমূহের কোনো কোনো বৃত্তিকে প্রাপ্য ভোজে ও ভোগে পরিপূর্ণ করে তোলার আয়োজন, কিন্তু এতে রয়েছে মূলের প�

Written by : Nejam Kutubi - Describe about you

"And still even today I hear the mournful tune of the Sanai"Say,Valiant,High is my head!I am the rebel,the rebel son of mother-earth!Ever-high is my head.O travellers on the road of destruction,Hold fast Ur hammer,pick up Ur shovel,Sing in unison And advance.We created in the joy of our arms.We shall now destory at the pleasure of our feet.‘O Lord,For eight years have I lived And never did I say my prayers And yet,did U ever refuse me my meals for thet?Ur mosques And temples are not meant for men,Men heve no right in them.The mollahs And the Priests Heve closed their doors under locks And keys.’Comrades, Hammer away at the closed doors Of those mosques And temples,And hit with Ur shovel mightily.For,climbing on their minarets,The cheats are today glorifying Selfishness And hypocrisy.And creatr a new universe of joy And peace.Weary of struggles,I,the great rebel,Shall rest in quiet only when I find The sky And the air free of the piteous groans of the oppressef.Only when the dattlefields are cleared of jingling bloody sabres Shall I,weary of struggles,rest in quiet,I,the great rebel.I am the rebel-eternal,I raise my head beyond this world,High,ever-erect And alone!.

Join Me On: Facebook | Twitter | Google Plus :: Thank you for visiting ! ::

0 comments:

Post a Comment