Recent News of WikiBangla ধূমকেতু নিউজ ম্যাগাজিন

Home » , , , , , » খোলা হাওয়া- সাম্প্রদায়িক সহিংসতার শেষ কোথায়? by সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম

খোলা হাওয়া- সাম্প্রদায়িক সহিংসতার শেষ কোথায়? by সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম

বাংলাদেশে গত দুই-আড়াই দশকে যেসব নির্বাচন হয়েছে, সেগুলোতে হয় আওয়ামী লীগ অথবা বিএনপি জিতেছে। একটি দল একবার হারলে আরেকবার জেতার সুযোগ পেয়েছে।
কিন্তু প্রতিটি নির্বাচনেই একটি পক্ষ বারে বারে হেরেছে—সেই পক্ষটি বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। তারা ভোট দিতে গেলে জামায়াত-বিএনপির কোপানলে পড়ে, না দিতে গেলে আওয়ামী লীগের রোষের শিকার হয়। বিএনপি-জামায়াত বিশ্বাস করে, সংখ্যালঘুরা আওয়ামীপন্থী; আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে, তাদের ভোট না দিয়ে সংখ্যালঘুদের উপায় নেই। ফলে নির্বাচনের মৌসুম শুরু হলে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টানেরা আতঙ্কে থাকেন। ২০০১ সালের নির্বাচনের পর হিন্দুদের ওপর যে বর্বর নির্যাতন করা হয়েছিল রামসাগর ও অন্যান্য জায়গায়, তার তুলনা দেখা গেছে শুধু একাত্তর সালে। দেশের মানুষ এই বর্বরতার প্রতিবাদ জানিয়েছিল, সরকার একটি কমিটি করে তদন্তও করেছিল। কমিটি একপ্রস্থ সুপারিশও তৈরি করেছিল। কিন্তু সে অনুযায়ী কোনো কাজ হয়নি। গত ১৩ বছরে বরং যা হয়েছে, তাকে বলা যায় নিরবচ্ছিন্ন ঠোঁটসেবা।

যে আওয়ামী লীগকে ভোট দেওয়ার ‘অপরাধে’ হিন্দুসহ অন্য সংখ্যালঘুদের ওপর এত নির্যাতন, ঠোঁটসেবাটা তারাই বেশি দিয়েছে। কথা অনেক হয়েছে, কিন্তু কাজ হয়নি। বিচ্ছিন্ন কিছু ধরপাকড় এবং দু-এক অপরাধীর জেল-জরিমানা হয়েছে। কিন্তু বেশির ভাগ অপরাধী রয়ে গেছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত করা, অপরাধীদের শাস্তির বিধান করা, নির্যাতনের কারণগুলো চিহ্নিত করে দীর্ঘমেয়াদি প্রতিকারের ব্যবস্থা করা, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা—এসব কিছুই হয়নি। রাষ্ট্র তার জনগণের একটি অংশকে কার্যত অবহেলাই করে গেছে।
ফলে এবারও নির্বাচনের আগে, নির্বাচনের দিন এবং নির্বাচনের পরে সংখ্যালঘুদের, বিশেষ করে হিন্দুদের ওপর নির্যাতনের খড়্গ নেমে এসেছে। ওই নির্বাচনটি নিয়ে এমনিতেই প্রবল শঙ্কা ছিল মানুষের মনে। ১৮-দলীয় জোট যেকোনো মূল্যে নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়ে রেখেছিল, সরকারও বদ্ধপরিকর ছিল যেকোনো মূল্যে নির্বাচন করার। তবে বরাবরের মতো এই ‘মূল্য’টা কোনো নেতা-নেত্রীকে দিতে হয়নি, দিতে হয়েছে সাধারণ মানুষকে, বিশেষ করে সংখ্যালঘুদের। নির্বাচনের আগে সরকার আরও ঘোষণা দিয়েছিল, ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে—সে লক্ষ্যে সেনাবাহিনীকেও মাঠে নামানো হয়েছিল। নির্বাচন কমিশনও ভোটারদের সুরক্ষা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল। সাধারণ মানুষের মনে কোনো সন্দেহ ছিল না যে সন্ত্রাস হবে এবং ব্যাপক আকারে হবে। কিন্তু ভোটকেন্দ্র হওয়ার অপরাধে ৫৩১টি স্কুল যখন পুড়িয়ে দেওয়া হলো, তখন মনে হয়েছিল, এ দেশে সবই সম্ভব। যারা স্কুলে আগুন দিতে পারে, তারা যে মানুষের ঘরবাড়িতেও আগুন দিতে পারে, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ থাকার কথা নয়। কিন্তু সরকার কোনো কার্যকর পদক্ষেপই নিল না। আমাদের সরকারগুলো এমনিতেই পা-ভারী, চলে পা টানতে টানতে। এক দিনের রাস্তা যায় এক মাসে। সরকারের প্রস্তুতিহীনতা ও উদাসীনতার সুযোগ নিয়ে ১৮-দলীয় মাঠকর্মীরা নেমে পড়ল সংখ্যালঘু নির্যাতনে। সাতক্ষীরা, যশোর, দিনাজপুরসহ নানা জায়গায় নারকীয় তাণ্ডব হলো, তাদের মন্দির পুড়ল, প্রতিমা ভাঙচুর হলো, বাড়িতে আগুন দেওয়া হলো, মেয়েরা ধর্ষিত হলো। এই সহিংসতা চলল অব্যাহতভাবে এবং এই তাণ্ডবে কোনো কোনো জায়গায় অংশ নিল আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকেরাও। ১৩ জানুয়ারির কাগজেও পড়লাম, দেশের তিন জায়গায় মন্দির ভাঙচুর হয়েছে, লুটপাট হয়েছে। অথচ ১০ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভায় জানালেন, সব ধরনের সহিংসতা প্রতিরোধে তিনি এবার কঠোর হবেন।
নতুন সরকারের অনেক মন্ত্রী ও সচিবালয়ে তাঁদের প্রথম দিনটিতে সাংবাদিকদের জানালেন, হ্যাঁ, সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধ করতে সরকার কঠোর হবে। কিন্তু এই ‘হবে’টা ঠিক কবে, তা বোঝা গেল না। যেকোনো ধরনের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর ‘কবে’টা যত দ্রুত হয়, ততই মঙ্গল এবং সেটি গতকাল হলেই ভালো। অর্থাৎ এসব উদ্যোগে এক দিন দেরি করাটাই অপরাধীদের অনেকটা জায়গা ছেড়ে দেওয়া। ১০ জানুয়ারি এবং ১৩ জানুয়ারির মধ্যে যে শুধু অনেকগুলো হামলার ঘটনা ঘটল, তা নয়, অনেক মানুষের জীবনের স্বপ্ন ভেঙে গেল; তাঁরা চোখের সামনে উপাসনালয় পুড়তে দেখলেন, রাষ্ট্রের ওপর বিশ্বাস হারালেন; মনুষ্যত্ব আরেকবার রক্তক্ষরণের শিকার হলো। সরকারের উচ্চপর্যায়ের লোকজন যে কথা বলতে পছন্দ করেন এবং কথার পেছনে কাজ করার প্রতিজ্ঞাটা যে প্রায়ই অনুপস্থিত থাকে, তা প্রশাসনের মাঠপর্যায়ের ব্যক্তিরা যেমন জানেন, অপরাধীরাও জানে। ফলে সহিংসতা চলতে থাকে, থানা-পুলিশ কিছু ধরপাকড় করে। কিন্তু মূল হোতারা থেকে যায় পর্দার আড়ালে।
অবস্থা এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে যে এখন দুটি ফরিয়াদ নিয়ে সরকার ও দেশবাসীর কাছে উপস্থিত হয়েছেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কেউ কেউ। তাঁরা বলছেন, ভোটার তালিকা থেকে তাঁদের নাম কেটে দেওয়া হোক, যাতে নির্বাচন এলে তাঁদের টার্গেট না করা হয়; অথবা তাঁদের জন্য আলাদা নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হোক। এসব শুনে আর এখন কেউ এ কথাটি জোর গলায় বলতে পারবে না, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। বস্তুত, ২০১২ সালে রামুতে বৌদ্ধদের ওপর যখন নৃশংস হামলা হয়, তখনই একটি কাগজে লেখা হয়েছিল, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির যেটুকু অবশিষ্ট ছিল, তা-ও পুড়িয়ে ফেলা হলো।
সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের কারণ খুঁজতে পরিশ্রম করতে হয় না—এসব এখন সবার কাছেই স্পষ্ট। প্রথম কারণটি হচ্ছে ভূমিদস্যুতা, দ্বিতীয়টি তাদের গায়ে আওয়ামী ভোটব্যাংকের সিল পড়ে যাওয়া এবং তৃতীয় হচ্ছে জঙ্গিবাদপ্রসূত অসহিষ্ণুতা, যা ভিন্ন ধর্মের মানুষ ও তাদের মন্দির-প্যাগোডা-গির্জার ওপর আক্রমণকে ন্যায্যতা দিচ্ছে। মুসলমানদের চেয়ে সংখ্যালঘুদের জমি দখল করাটা সহজ—তাদের ওপর আক্রমণটা তীব্র করলে তারা ভিটেমাটি ফেলে জীবন বাঁচাতে সীমান্ত পার হয়ে চলে যাবে, এ রকম প্রত্যয় থেকে হামলা হয়। এই হামলায় থাকে সব দলের ভূমিদখলদার। এই তিন কারণের ত্রিশূল থেকে বাঁচার উপায় সংখ্যালঘুদের জানা নেই। ফলে জীবন বাঁচাতে সত্যিই তাঁরা দেশান্তরিত হচ্ছেন। ১৯৭৮ সালে যেখানে মোট জনসংখ্যার প্রায় ১৪ শতাংশ ছিল সংখ্যালঘু, ২০১১ সালে এসে সেই সংখ্যা নেমে গেছে ৯ শতাংশের নিচে। এই পরিসংখ্যান আমাদের লজ্জিত করে, মর্মাহত করে। যাঁরা বাংলাদেশকে ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ’ বলে বিশ্বসভায় পরিচয় করিয়ে দিতে চান, তাঁদের এই পরিসংখ্যান পরিহাস করে।
২০১৩ সাল ছিল অব্যাহত সন্ত্রাসের বছর, সে বছর বাংলাদেশ ধর্মীয় উগ্রতার যে চেহারা দেখেছে, তার পুনরাবৃত্তি কখনো ঘটুক, কোনো বিবেকবান মানুষ তা চাইবেন না। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, এই দেশে বিবেক নামের বস্তুটি এখন দুষপ্রাপ্য। গত ৫ মে ঢাকা শহর ছিল হেফাজতে ইসলামের কর্মীদের দখলে, সেদিন বায়তুল মোকাররম এলাকায় আগুনের হাত থেকে রক্ষা পেল না কোরআন শরিফও। পুড়তে থাকা কোরআন শরিফের ছবি টিভিতে দেখে চোখের পানি ফেলেছেন ধর্মপ্রাণ মুসলমান। কিন্তু তা নিয়ে ধর্মীয় দলগুলো কোনো উচ্চবাচ্য করল না। এত ধর্মীয় দল-গোষ্ঠী-সংগঠন দেশজুড়ে, অথচ এ রকম একটি বর্বর ঘটনার কোনো প্রতিবাদ করা হলো না। এই নীরবতা আমাদের মনে করিয়ে দিল, বিবেক বিদায় নিয়েছে; এখন মতলব হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রধান। ফলে উগ্রবাদীরা যদি ভিন্ন ধর্মের মানুষকে নির্যাতন করে, তাদের উপাসনালয়ে আগুন দেয়, তার প্রতিবাদও জোরেশোরে হয় না। দলগুলো ব্যস্ত থাকে ভোটের এবং ক্ষমতার চিন্তায়, প্রশাসন ব্যস্ত থাকে সরকারের মতলব বুঝে কাজ করতে। কোনটা আন্তরিকতা, কোনটা ঠোঁটসেবা, তা তো প্রশাসনের মানুষ বোঝে। সে জন্য আইনের হাতটাও আর লম্বা হয় না। আইনের হাতটা দিন দিন ছোটই হচ্ছে বরং, বিশেষ করে প্রান্তিক ও দরিদ্র মানুষ এবং সংখ্যালঘুদের জন্য।
কিন্তু এই অবস্থা তো চলতে দেওয়া যায় না। ১৯৬৪ সালে সে সময়ের পূর্ব পাকিস্তানে যখন সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব দেশবাসীকে আহ্বান জানিয়েছিলেন রুখে দাঁড়ানোর জন্য। রুখে এবারও দাঁড়াতে হবে। নতুন সরকার নিয়ে এখনো বিতর্ক চলছে—বৈধ না অবৈধ, এ নিয়ে প্রচুর বাগ্যুদ্ধ হচ্ছে। সাধারণ মানুষ এই বিতর্কে যায় না। ভোট দিতে না পেরে মানুষ হতাশ হয়েছে, কিন্তু বেশির ভাগ মানুষকেই এখন নজর দিতে হচ্ছে জীবনসংগ্রামে। এখন সরকার যদি সত্যিকার অর্থে কঠোরতা দেখায়, সব ধরনের সন্ত্রাস-সহিংসতাকে শক্ত হাতে মোকাবিলা করে, নিজের দলের অপরাধীদেরও রেহাই না দেয় এবং জনজীবনে শান্তি ফিরিয়ে আনে, তাহলে মানুষ বৈধ-অবৈধ বিতর্কটি নিয়ে মাথা ঘামাবে না। দেশের মানুষ সাম্প্রদায়িক হানাহানি চায় না। ফলে এই হানাহানি বন্ধ করতে সরকার যে উদ্যোগ নেবে, তাতে মানুষের সমর্থন থাকবে।
একই সঙ্গে বিবেকবান প্রত্যেক মানুষকে এখন এগিয়ে আসতে হবে। ২০১৪ সালে আমরা সত্যিকার অর্থে একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে দেখতে চাই। সাম্প্রদায়িক সহিংসতার শেষ আমরা চাই, তার শুরুটা এখনই হোক।

সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম:
কথাসাহিত্যিক। অধ্যাপক, ইংরেজি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

Written by : Nejam Kutubi - Describe about you

"And still even today I hear the mournful tune of the Sanai"Say,Valiant,High is my head!I am the rebel,the rebel son of mother-earth!Ever-high is my head.O travellers on the road of destruction,Hold fast Ur hammer,pick up Ur shovel,Sing in unison And advance.We created in the joy of our arms.We shall now destory at the pleasure of our feet.‘O Lord,For eight years have I lived And never did I say my prayers And yet,did U ever refuse me my meals for thet?Ur mosques And temples are not meant for men,Men heve no right in them.The mollahs And the Priests Heve closed their doors under locks And keys.’Comrades, Hammer away at the closed doors Of those mosques And temples,And hit with Ur shovel mightily.For,climbing on their minarets,The cheats are today glorifying Selfishness And hypocrisy.And creatr a new universe of joy And peace.Weary of struggles,I,the great rebel,Shall rest in quiet only when I find The sky And the air free of the piteous groans of the oppressef.Only when the dattlefields are cleared of jingling bloody sabres Shall I,weary of struggles,rest in quiet,I,the great rebel.I am the rebel-eternal,I raise my head beyond this world,High,ever-erect And alone!.

Join Me On: Facebook | Twitter | Google Plus :: Thank you for visiting ! ::

0 comments:

Post a Comment