Recent News of WikiBangla ধূমকেতু নিউজ ম্যাগাজিন

Home » , , , , , » সাম্প্রদায়িকতা- আমরা কী করছি? by কুররাতুল-আইন-তাহমিনা

সাম্প্রদায়িকতা- আমরা কী করছি? by কুররাতুল-আইন-তাহমিনা

জ্ঞান হওয়ার পর থেকে তাঁরা আমার ‘কাকু’ আর ‘কাকিমা’। আমার বাবা আর কাকু বন্ধু হয়েছিলেন ঢাকা আর্ট কলেজ, আজকের চারুকলা অনুষদে পড়ার সময় থেকে। তাঁদের বয়স এখন আশির কাছেপিঠে। আমাদের দুই পরিবার আত্মীয়র চেয়ে বড় আত্মীয়।

১৯৭১ সালের গোড়ায় পরিবারটি আমাদের পাশের বাসায় থাকত। নিরাপত্তাহীনতার বোধ থেকেই তাঁরা আমাদের পাশাপাশি থাকতেন, বড়দের কথাবার্তা থেকে এমন একটা ধারণা মনে গেঁথে গিয়েছিল। পঁচিশে মার্চের পর পর বাবা কাকুদের আমাদের বাসায় এনে রাখলেন। আমাদের শেখানো হলো কাকু-কাকিমাকে ‘সামাদ চাচা’ আর ‘সালমা চাচি’ ডাকতে, কেননা দেয়ালেরও কান থাকে।

ঢাকায় আত্মীয়সম প্রতিবেশীঘেরা পুকুরপাড়ের সেই নিরালাপাড়া থেকে দুই শিশুসন্তানসহ কাকু আর কাকিমাকে পাঠানো হয়েছিল মুন্সিগঞ্জের এক গ্রামে। পরে সেখানকার পরিস্থিতি অনিরাপদ হয়ে পড়লে বাবা গিয়ে তাঁদের নিয়ে এসে ভারতে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।

তাঁদের ছেলে সুমন তখন মাত্র কয়েক মাস বয়সী। আমার মা তার খাওয়ার জন্য গুঁড়া দুধের যে টিন সঙ্গে দিয়েছিলেন, তার মধ্যে পলিথিনে মুড়ে দিয়েছিলেন কাকিমার সোনার গয়নাগুলো—দুর্দিনে কাজে লাগবে বলে। আজও কাকিমা সেই গল্প করে চোখের পানি মোছেন।

স্বাধীন দেশে কাকু-কাকিমারা ফিরে এলেন। কাকু চারুকলা অনুষদে শিক্ষকতা করেন, যশস্বী শিল্পী। ছেলেমেয়েও এখন সুপ্রতিষ্ঠিত। কিন্তু বহুকাল তাঁদের অস্তিত্বের সঙ্গে জড়িয়ে থেকেছে ভয়ে ভয়ে থাকার বাস্তবতা।
প্রতিদিনের সব খুঁটিনাটি তো আর জানি না, তবে একটা কথা ভুলতে পারি না। তাঁরা তখন আজিমপুরে একটি সরকারি আবাসনে থাকতেন। একদিন সামনের মাঠে সুমনদের ‘হিন্দু! হিন্দু! ইন্দুর! ইন্দুর!’ বলে ধাওয়া দিয়েছিল খেলার সাথিরা।

ধর্মীয় পরিচয়ের উপলক্ষে লাঞ্ছিত হওয়া, আতঙ্কিত হওয়া, লুণ্ঠিত হওয়া, আক্রান্ত হওয়ার এই সর্বসাম্প্রতিক পর্বে বারবারই এসব কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। কাকু-কাকিমার ঘরে লাগেনি, কিন্তু এ আগুন তো তাঁদের অস্তিত্বকেও স্পর্শ করছে। স্বাধীনতার ৪২ বছরেও বারবারই তাঁরা নিজেদের ‘সংখ্যালঘু’ ভাবতে বাধ্য হয়েছেন। এই সময়ে তাঁরা কেমন আছেন, সে কথা আর জিজ্ঞাসা করতে পারি না লজ্জায়। এ লজ্জা ‘সংখ্যাগুরু’ হওয়ার লজ্জা। অপরাধবোধও আছে।

আমার মোবাইলে একটি চিরকুট এসেছে। একজন ‘সংখ্যালঘু’ বন্ধু লিখেছেন: ‘বলছি বটে ভালো আছি, আছি কি আসলে? এই ভাবনা ক্রমাগত তাড়া করে ফিরে। লঘিষ্ঠের ওপর গরিষ্ঠের নির্বিচার আক্রমণ-নির্যাতন তার সমগ্র অস্তিত্বকেই গ্রাস করে ফেলছে দিনে দিনে। ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হচ্ছে তার বেঁচে থাকার, টিকে থাকার অধিকার। সমাজ কেবলই মুখের বুলি আর পত্রিকার পাতায় বিবৃতিতেই দায় সারছে। একবার উঠে দাঁড়াচ্ছে না, এমনই বিষঘুমে কাতর। বড় বেশি অপরাধী মনে হয় নিজেকে।...’

এই বাংলাদেশে কে আছেন, যিনি জীবনের কোনো না কোনো সময়ে ‘সংখ্যালঘু’ কারও সঙ্গে পরিচিত হননি? কিন্তু আমাদের ‘সংখ্যাগুরু’দের এমন অভিজ্ঞতা নেই যে ‘সংখ্যালঘু’ শব্দটির মর্মবেদনা বুঝতে পারি। কিছু অভিজ্ঞতা নিজে ভোগ না করলে সমমর্মী হওয়া যায় না।

২০০১ সালে নির্বাচনের পর কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার একটি গ্রামে আক্রান্ত হিন্দুধর্মাবলম্বীদের ঘর আর জীবনের ধ্বংসস্তূপের মধ্যে দাঁড়িয়ে এক নারী যে কথা বলেছিলেন, তা ভুলতে পারি না। তিনি বলেছিলেন, ব্যাপক লুটেরা আর প্রাণঘাতী হামলাকারীরা যে এলাকারই লোকজন, এটা তাঁকে সবচেয়ে ভীত আর আতঙ্কিত করেছে। যাদের মধ্যে বসবাস, যাদের সঙ্গে নিত্যদিনের লেনদেন, তাদের কেউ কেউ এক রাতের মধ্যে হিংস্র ঘাতক হয়ে গেলে নিরাপত্তাবোধের শিকড় একেবারেই নির্মমভাবে উপড়ে যায়।

২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াতের জোট জিতেছিল। বলা হয়, সেই উপলক্ষে হিন্দুধর্মাবলম্বী মানুষজনের ওপর হামলা হয়েছিল, তারা পরাজিত আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছে বলে ধরে নিয়ে। বরিশালের গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া উপজেলায় উপদ্রুত হিন্দুধর্মাবলম্বীদের কাছে তখন শুনেছিলাম, আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা পলাতক আর জাতীয় নেতাদের কেউ তাঁদের পাশে আসেননি।
কোনো সরকার বা বিজেতার আমলেই কি ‘সংখ্যালঘু’রা নিরাপদ?

২০১৩ সালজুড়ে বিভিন্ন এলাকায় হিন্দুধর্মাবলম্বী মানুষজন আক্রান্ত হয়েছে। এবারও একটি নির্বাচনী প্রেক্ষাপট রয়েছে, যে নির্বাচনের কুশীলব ও বিজেতা আওয়ামী লীগ। আরও রয়েছে তাদেরই বিগত আমলে শুরু হওয়া মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত জামায়াত-বিএনপি নেতাদের বিচারের পটভূমি।

আক্রমণকারী হিসেবে এবারও জামায়াত-বিএনপির নাম আসছে। কিন্তু সমীকরণটি কি আসলেই সরল? ২০১২ সালে কক্সবাজারের রামুতে বৌদ্ধদের ওপর হামলার ঘটনায় বিএনপি জামায়াতের সঙ্গে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতার জড়িত থাকার কথা মনে পড়ে যায়। মনে পড়ে যায় চান্দিনার সেই গৃহবধূর অনুধাবনের কথাও। ২০০১ সালের ঘটনাগুলোয় কয়জনের সাজা হয়েছিল? বিচার ঠিকঠাক হয়েছে? দৃষ্টান্তমূলক কিছু ঘটেছে বলে মনে পড়ে না।

১৯৭৫, ১৯৯০, ১৯৯২, ২০০১, ২০১২, ২০১৩—এসব ধ্বংস, উৎ খাত-নির্মূল করার চেষ্টা অথবা জাতিহত্যার (জেনোসাইড) হয়তো উপলক্ষগুলোই কেবল স্পষ্ট। সাম্প্রদায়িক রাজনীতি আর প্রতিহিংসা ছাড়াও প্রতিটি ঘটনার সামাজিক ও দখলবাজির হিসাবনিকাশের জট লাগানো কারণগুলো কি আমরা জানি? প্রশাসন-রাষ্ট্রও কি তা জানানোর যথার্থ চেষ্টা করেছে? আক্রান্ত ব্যক্তিরা বেশির ভাগই দরিদ্র, দুর্বল মানুষ; তবে সচ্ছল ব্যবসাজীবীরাও তো চাঁদাবাজি আর আক্রমণের শিকার হয়েছেন।

যশোরের অভয়নগর উপজেলার চাঁপাতলা গ্রামের মালোপাড়ায় হিন্দুধর্মাবলম্বী জেলে পরিবারগুলোর ওপর আক্রমণ হয় ৫ জানুয়ারি ভোটের দিন সন্ধ্যায়। ৭ জানুয়ারি প্রথম আলোয় এ ঘটনার প্রতিবেদনের সঙ্গে এক মা ও মেয়ের ছবি ছিল। ছোট্ট মেয়েটির নাম বিপাশা বর্মণ। ভাঙচুরে তছনছ হয়ে যাওয়া ঘরের সামনে উপোসি শিশুটির কান্নাব্যাকুল চোখে ভীতি-অসহায়ত্বের পাশাপাশি যে জিজ্ঞাসা আছে, তা অসহনীয়।

ছবিতে মা সঞ্চিতা বর্মণের চোখ নিচু, মুখ কান্নায় অবরুদ্ধ। তাণ্ডবের সময় এ পরিবারটি গ্রামেই ছিল। সঞ্চিতা প্রতিবেদককে বলেছেন, ‘আমিই শ্বশুরমশাইকে বলেছিলাম, বাবা, আমরা কোথাও যাব না। মরলে সবাই একসঙ্গে মরব। কানবার যেন কেউ না থাকে।’

কী স্মৃতি নিয়ে বেড়ে উঠবে ছোট্ট বিপাশা? চাঁপাতলার অন্য মানুষজন হামলাকারীদের ভয়ে আসতে পারেনি। তবে চরম মুহূর্তে ১১২টি তাড়া খাওয়া পরিবারের পাশে দাঁড়ায় ভৈরব নদের অন্য পারের গ্রাম দেয়াপাড়ার হিন্দু-মুসলিম বাসিন্দারা। আক্রান্ত ব্যক্তিদের অনেকেই কনকনে শীতের রাতে বাচ্চাদের নিয়ে নদী সাঁতরে সেখানে আশ্রয় নেয়।
মালোপাড়ার একজন জানান, আক্রমণের ঘণ্টা খানেক আগে আঁচ করতে পেরে পুলিশ ও স্থানীয় আওয়ামী লীগকে খবর দিয়েছিলেন। আক্রমণের সময়ও বারবার নেতাদের ফোন করেছেন। কেউ আসেননি।

আরেকজন জানান, দুই দিন আগে এখানে একটি পানের বরজে আগুন দেওয়া হলে পুলিশকে জানানো হয়েছিল। পুলিশ এসে ঘুরে গেছে কিন্তু ‘নির্বাচনী ব্যস্ততার জন্য’ এঁদের সুরক্ষার ব্যবস্থা নেয়নি। সব শেষ হওয়ার পর সেখানে পুলিশ ক্যাম্প বসেছে।

এসব হামলা আগে আঁচ করা অসম্ভব ছিল না। মানবতাবিরোধী অপরাধের রায়ের জেরে সংখ্যালঘুদের ওপর যে আক্রমণ হতে পারে, সেটা বুঝতে ব্যাপক বুদ্ধি লাগে না। নির্বাচনের প্রতিক্রিয়ার অজুহাতে সহিংসতা সম্পর্কেও একই কথা খাটে। সংখ্যালঘু-অধ্যুষিত এবং জামায়াত ও শিবির-প্রভাবিত এলাকাগুলো চেনাও কঠিন নয়। সুরক্ষার ব্যবস্থা যে নেওয়া হয়নি, সেটা সরকারের নিষ্ঠুর অবহেলা। আর ‘আমি’ কী করছি, সেটাও তো হিসাব করার থাকে।

আমরা সাংবাদিকেরাই কি সরকারকে আগাম ব্যবস্থা নিতে বাধ্য করার চেষ্টা করেছি? আমরাও ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরই রিপোর্ট করেছি। ‘সংখ্যাগুরু’ নাগরিক হওয়ার আত্মগ্লানির ওপরে এ লজ্জাও যোগ হচ্ছে তবে।
এখনো কিন্তু আমরা অন্তত কিছু ঘটনার প্রকৃত কারণ খুঁজে পরিস্থিতি তুলে ধরা এবং যথাযথ তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার জন্য লেগে থাকার ব্রত নিতে পারি। যতটুকু পারি, করতে চেষ্টা তো করি?

কুররাতুল-আইন-তাহমিনা:
সাংবাদিক।

Written by : Nejam Kutubi - Describe about you

"And still even today I hear the mournful tune of the Sanai"Say,Valiant,High is my head!I am the rebel,the rebel son of mother-earth!Ever-high is my head.O travellers on the road of destruction,Hold fast Ur hammer,pick up Ur shovel,Sing in unison And advance.We created in the joy of our arms.We shall now destory at the pleasure of our feet.‘O Lord,For eight years have I lived And never did I say my prayers And yet,did U ever refuse me my meals for thet?Ur mosques And temples are not meant for men,Men heve no right in them.The mollahs And the Priests Heve closed their doors under locks And keys.’Comrades, Hammer away at the closed doors Of those mosques And temples,And hit with Ur shovel mightily.For,climbing on their minarets,The cheats are today glorifying Selfishness And hypocrisy.And creatr a new universe of joy And peace.Weary of struggles,I,the great rebel,Shall rest in quiet only when I find The sky And the air free of the piteous groans of the oppressef.Only when the dattlefields are cleared of jingling bloody sabres Shall I,weary of struggles,rest in quiet,I,the great rebel.I am the rebel-eternal,I raise my head beyond this world,High,ever-erect And alone!.

Join Me On: Facebook | Twitter | Google Plus :: Thank you for visiting ! ::

0 comments:

Post a Comment