Recent News of WikiBangla ধূমকেতু নিউজ ম্যাগাজিন

Home » , , , , , , » অরণ্যে রোদন- কী ব্যবস্থা নিলেন? by আনিসুল হক

অরণ্যে রোদন- কী ব্যবস্থা নিলেন? by আনিসুল হক

আমার এক বন্ধু আমাকে বার্তা পাঠিয়েছেন: ‘সারা দেশে যা হচ্ছে, তা দেখে আমি, আমার পরিবার, আমার সম্প্রদায়—আমরা কেউ এতটুকু আশ্চর্য নই। এটাই ইতিহাস, আমরা জানি এ রকম হয়, হয়েছে বহু।
আমরা জানি এ রকম হতোই। আমরা জানি এ রকম হতেই থাকবে। ৪৬, ৪৭, ৬৫, ৬৬, ৭১, ৭৫, ৯০, ৯১, ৯৬, ২০০১, ২০০৮, ২০১৪ বা গুজরাট, বাবরি মসজিদ, রাখাইন, যুদ্ধ, ভোট—সব সময়ই একই ভবিতব্য।

‘এই নিয়তি আমার দাদার, বাবার, মায়ের, এই নিয়তি আমার, এই নিয়তি আমার সন্তানেরও। হ্যাঁ, আমার সন্তানেরও, কারণ বদলায়নি কোনো কিছুই, তথাকথিত শিক্ষা, আধুনিকতা বরং সাম্প্রদায়িকতার সঙ্গে যোগ করেছে হিপোক্রিসির নতুন নতুন পথ। আমার বাবার আমলের ধর্মান্ধরা অ্যাট লিস্ট হিপোক্রিট ছিল না। আর হ্যাঁ, আরেকটা জিনিসও নতুন, ফেসবুকের আর্তনাদটুকু। যেমন এখন আমি করছি, যেমন অনেকেই করে; গা-জোয়ারি স্ট্যাটাস দিয়ে তৃপ্ত হচ্ছে।
‘এ ছাড়া, আগেও আমরা জ্বলেছি, পুড়েছি, মরেছি, হারিয়েছি অনেক। একদল মেরেছে তো আরেক দল এসে টেনে তুলেছে। একদল তাড়িয়ে দিয়েছে তো আরেক দল আমার ভিটের দরজা ধরে বলেছে, ফিরে এসো, আমি আছি পাশে। এখনো তা-ই হচ্ছে। তাই কোনো বিশেষ ধর্মের ওপর আমার, আমাদের কোনো ক্ষোভ বা অভিযোগ নেই। অভিযোগ যদি থেকে থাকে, তা আছে ধর্মকে ব্যবহার করা সমাজের ওপর, ক্ষোভ ধর্মাবলম্বীর সংখ্যা দিয়ে করা রাজনীতির ওপর। সেই ক্ষোভও প্রাগৈতিহাসিক। আমার পূর্বপুরুষের ছিল, আমার আছে এবং আবার বলছি, শুনতে খারাপ লাগবে, এই বাংলাদেশে থেকে আমার সন্তানকেও একই ক্ষোভ করতে হবে।
‘তাই বলছিলাম, ক্ষোভ নেই, নতুন করে কোনো অভিযোগ নেই, নতুন কোনো দুঃখ নেই—আছে সেই পুরোনো ক্ষত, সেই পুরোনো কান্না, সেই পুরোনো অভিমান-অপমানে মাথা নিচু করতে করতে মাটির সঙ্গে মিশে যাওয়ার যন্ত্রণা। কেউ বিশ্বাস করতে পারবে না—মালাউন বলে গাল শুনতে, ইন্ডিয়ার দালাল বলে মিথ্যে অভিযুক্ত হতে, সবকিছুতে মাঝপথে থেমে যেতে, যেকোনো ঘটনায় মালু স্লোগানের সঙ্গে আগুন আর খড়্গকে ধেয়ে আসতে দেখে কেমন লাগে, কী হয় বুকের ভেতরটায়।
‘আমরা যদি শুধু আওয়ামী লীগের সমর্থক হিসেবে মরতাম, যদি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে থাকার জন্য ঘর জ্বলত, যদি শুধু রাজাকারদের ঘৃণা করার জন্য সম্ভ্রম যেত, যদি শুধু বাংলাদেশকে বাংলাদেশ হিসেবেই দেখতে চাই বলে দেশ ছাড়তে হতো, তবে এতটুকুও কষ্ট হতো না, যতটা হয় শুধু হিন্দু পরিচয়ের জন্য এই শাস্তি পেতে হয় বলে।
‘হিন্দু পরিচয়ের জন্য মরে যাওয়াও যে কী অপমানের, হিন্দু পরিচয়ের জন্য জন্তুর মতো দেশ থেকে পালানো কতটা অপমানের, কতটা ঘেন্নার, তা কেবল যে সয়, যে বয়ে বেড়ায় সেই বোঝে। গুজরাটের আলী হায়দারের কী যন্ত্রণা তা সৌদি আরবের বাদশার চেয়ে নিযুত গুণ বেশি জানি আমি, ভ্যাটিকানের পোপের চেয়ে বেশি বুঝতে পারি মিসরের কপ্ট ক্রিশ্চানরা কী ক্ষত বয়ে বেড়ায়, ইসরায়েলিদের চেয়ে বেশি অনুভব করি অ্যান ফ্রাংকের মন। সংখ্যালঘু শব্দটার কারাগার থেকে মুক্তি পেতে আমাদের কতটা ইচ্ছে করে, একবার মানুষ হতে কী ভীষণ আকুতি, তা জানি কেবল আমি, তা জানে কেবল আলী হায়দার।’
এই বার্তা পড়ে স্তব্ধ হয়ে থাকতে হয়। চিরসুখী জন ভ্রমে কি কখন ব্যথিত বেদন বুঝিতে পারে? আমরা ভাব করতে পারি,
সমস্ত অনুভূতি দিয়ে বোঝার চেষ্টা করতে পারি একজন মানুষ যখন কোনো একটা পরিচয়ের জন্য সংখ্যালঘু হিসেবে গণ্য হয়, তখন তার কেমন লাগে। কিন্তু আমরা আসলে কি তা বুঝব? ওই পরিস্থিতির ভেতর দিয়ে না গেলে কি আসলে তা বোঝা যাবে? কিন্তু কতগুলো বাস্তব পরিস্থিতিও তো অনুভব করার চেষ্টা করা যায়।
রাতের অন্ধকারে ঘুমিয়ে পড়া শিশুটি যখন চিৎকার-চেঁচামেচির মধ্যে জেগে ওঠে, দিশেহারা মা যখন হঠাৎ ঘুম থেকে জেগে ওঠা শিশুটিকে কোলে করে ছুটতে থাকেন ঘর ছেড়ে, এই পৌষের শীতে যখন তারা নদীতে লাফিয়ে পড়ে ওই পারে যেতে চায় শুধু একটুখানি নিরাপত্তার জন্য, পেছনে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে তাদের ঘরবাড়ি, আগুন জ্বলছে, আর্তনাদ, শোরগোল, তখন তার কেমন লাগে আসলে! ওই নদী থেকে ভেজা শরীরে উঠে ওপারের গাছতলায় সারা রাত কাটানোর দৈহিক কষ্টটুকু হয়তো খানিকটা অনুভব করা যাবে, কিন্তু তাদের মনে, আরও আরও অসংখ্য মানুষের মনে তা যে গভীর অনিশ্চয়তা, নিরাপত্তাহীনতা, শিকড়হীনতা, ছায়াহীনতা, অবলম্বনহীনতার বোধ তৈরি করে, তা আমরা আসলেই অনুভব করতে পারব না।

দুই
রাষ্ট্র, সরকার, সমাজ তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারল না কেন? আমাদের হিন্দু বা বৌদ্ধ মানুষগুলোর তো উভয়সংকট। সরকারি দলের নেতা বলেছেন, তোমরা সবাই যাবে ভোটকেন্দ্রে। তাঁরা রওনা হয়েছেন। পথে নির্বাচন বর্জনকারী জোটের কর্মীরা শাসাচ্ছেন, ভোট দিতে গিয়ে দেখিস, ফেরার পরে বুঝবি! কোথাও কোথাও বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে তাদের ঘরবাড়ি দোকানপাট জ্বালিয়ে, ভেঙে, তছনছ করে, মারধর করে, লুটপাট করে।
কিন্তু প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, নেতারা করলেনটা কী? যেখানে এই আক্রমণ হয়েছে, সেসব জায়গা তো সেই কবে থেকেই অশান্ত। সরকার কি জানে না, কোথায় কোথায় জামায়াতের তাণ্ডব হয়েছে, হয়, হতে পারে? ১৪৭টা আসনে নির্বাচন, ৩০০টাতেও নয়, সরকার, নির্বাচন কমিশন বা প্রশাসন কেন আগে থেকে সেসব কেন্দ্রে, সেসব এলাকায় অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করল না? সংস্থাগুলো রিপোর্ট করতে পারল না কেন যে দেড়-দুই শ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হামলা করতে পারল দুর্বৃত্তরা? স্কুল পোড়ানো কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি হতে পারে না। ওটা এক দিনই কেবল ভোটকেন্দ্র, ৩৬৫ গুণন ৫ দিনই স্কুল। যারা নিজেদের রাজনৈতিক দাবি আদায় করার জন্য স্কুল পোড়ায়, তাদের জন্য সামান্য করুণাও নয়, কোনো ছাড় নয়। কঠোর ব্যবস্থা নিন। প্রতিটি স্কুলে হামলার ঘটনায়, প্রতিটি নির্বাচনোত্তর সহিংসতা, সাম্প্রদায়িক হামলার দ্রুত তদন্ত করুন, প্রকৃত অপরাধীদের শনাক্ত করুন এবং যে যে দলেরই হোক না বা হোক না নির্দলীয়, কঠোর হাতে দমন করুন, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিন। নির্বাচনের আগেও যেসব ঘরবাড়ি, উপাসনালয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে, প্রতিটির তদন্ত করুন, কী শাস্তি হচ্ছে, তা দেশবাসীর সামনে তুলে ধরুন।

তিন
বিমা কর্মকর্তা শাহীনা আক্তার (৪৫)। অফিসের কাজে খুলনা থেকে এসেছিলেন ঢাকায়। বাড়ি খুলনা শহরের টুটপাড়া। স্বামী সাংবাদিক এফ জামান। ঢাকায় এসে আটকা পড়েন অবরোধের কারণে। শুক্রবারে বের হন, কোনো কর্মসূচি নেই, কোনো বিপদ হবে না ভেবে। খুলনার বাস ধরতে গুলিস্তান যেতে হবে। বাসে ওঠেন। পরীবাগে সেই বাস শিকার হয় পেট্রলবোমার। দগ্ধ বাসযাত্রীদের নেওয়া হয় ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে। গত বুধবার ৮ জানুয়ারি ২০১৪ তিনি মারা যান। এমনিভাবে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে এসেছেন ১৪০ জন, গত অক্টোবর থেকে, প্রায় তিন মাসে, মারা গেছেন ২৩ জন। যাঁরা বেঁচে আছেন, তাঁদের জীবন দুর্বিষহ। পেট্রলবোমা ছুড়ে মানুষ মারা হচ্ছে সারা দেশে। পেট্রলবোমা মারা কি রাজনৈতিক কর্মসূচি? বিএনপির নেতারা বলছেন, তাঁদের কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ, অহিংস, তাঁরা এসব করেন না। তাঁরাও পেট্রলবোমা হামলাকারী, সাম্প্রদায়িক হামলাকারী প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তি চান। আমরা সরকারের কাছে জোর দাবি জানাই, প্রতিটি পেট্রলবোমা নিক্ষেপের ঘটনার তদন্ত করুন, যাকেই দোষী পাওয়া যাবে, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিন এবং কোন ঘটনায় কী ব্যবস্থা নেওয়া হলো, তা মানুষকে জানতে দিন।

চার
ভোট দেওয়ার অপরাধে ভোটারদের বাড়িঘরে হামলা, পেট্রলবোমা মেরে মানুষ পুড়িয়ে মারা—এজাতীয় ফৌজদারি অপরাধের সঙ্গে যুক্তদের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানাই সরকারের প্রতি। আর বিরোধী নেতা-কর্মীদের প্রতি আকুল আবেদন, রাজনৈতিক প্রতিবাদ কর্মসূচিকে রাজনৈতিক কর্মসূচির মতোই রাখুন; জঙ্গি, সন্ত্রাসবাদী, ফৌজদারি অপরাধমূলক তৎপরতা কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি হতে পারে না।
আমি যখন স্কুল পোড়ানোর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ করে স্ট্যাটাস দিই, মন্তব্য আসে, স্কুলগুলোতে নির্বাচন হয় কেন? তার মানেটা হলো, স্কুল পোড়ানো, মানুষের ওপর হামলা করে মানুষ মারা অনেকেই না হলেও কেউ কেউ সমর্থন করেন। আমরা কবে থেকে এই রকম নিষ্ঠুর হলাম? রাজনীতি আমাদের বিবেকের ওপর এমনি কালো পর্দা টেনে দিয়েছে যে নির্বাচন প্রতিহত করার জন্য সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে মেরে ফেলা কিংবা স্কুল পোড়ানোকেও আমরা সমর্থন করছি?
এই নির্বাচন প্রতিহত করারই বা কী ছিল। যে নির্বাচনে ১৫৩ জন ভোটের আগেই নির্বাচিত, সেই নির্বাচনের আবার গ্রহণযোগ্যতা কী? এটা প্রতিরোধ করার জন্য স্কুল জ্বালাতে হয়? প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, আনসারদের খুন করার মতো ঘটনা ঘটাতে হয়? শান্তির জন্য সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আমি জিরো টলারেন্সের পক্ষে। কঠোর হোন। দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিন। পাশাপাশি এও বলব, রাজনৈতিক সমস্যার পুলিশি সমাধান নেই। দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব সরকারের। সরকারকেই রাজনৈতিক সমস্যার রাজনৈতিক সমাধান দিতে পারতে হবে। কাজেই সরকারকেই বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে হবে। একটা মতৈক্যে পৌঁছাতেই হবে। আর বিরোধী দলকেও নাশকতা, ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি থেকে শতহাত দূরে থাকতে হবে। আর সমাজের মধ্যে যে ব্যাধি, যে বিভক্তি, হিংসাদ্বেষ, তা থেকে কোন শুশ্রূষায় সমাজকে সুস্থ করে তোলা যাবে, তা আমার জানা নেই।
আর কত শাহীনা আক্তারের লাশ দেখতে হবে আমাদের? আর কত শিশুর চোখ কিংবা আঙুল উড়ে যাবে ককটেলে? আর কত মানুষকে জীবন্ত দগ্ধ হতে হবে? পুলিশ আর কত গুলি চালাবে? কবে আমাদের নেতারা বলবেন, যথেষ্ট হয়েছে, এবার শান্তি চাই, এবার একটা সমঝোতায় পৌঁছানো দরকার।

আনিসুল হক: সাহিত্যিক ও সাংবাদিক।

Written by : Nejam Kutubi - Describe about you

"And still even today I hear the mournful tune of the Sanai"Say,Valiant,High is my head!I am the rebel,the rebel son of mother-earth!Ever-high is my head.O travellers on the road of destruction,Hold fast Ur hammer,pick up Ur shovel,Sing in unison And advance.We created in the joy of our arms.We shall now destory at the pleasure of our feet.‘O Lord,For eight years have I lived And never did I say my prayers And yet,did U ever refuse me my meals for thet?Ur mosques And temples are not meant for men,Men heve no right in them.The mollahs And the Priests Heve closed their doors under locks And keys.’Comrades, Hammer away at the closed doors Of those mosques And temples,And hit with Ur shovel mightily.For,climbing on their minarets,The cheats are today glorifying Selfishness And hypocrisy.And creatr a new universe of joy And peace.Weary of struggles,I,the great rebel,Shall rest in quiet only when I find The sky And the air free of the piteous groans of the oppressef.Only when the dattlefields are cleared of jingling bloody sabres Shall I,weary of struggles,rest in quiet,I,the great rebel.I am the rebel-eternal,I raise my head beyond this world,High,ever-erect And alone!.

Join Me On: Facebook | Twitter | Google Plus :: Thank you for visiting ! ::

0 comments:

Post a Comment