Recent News of WikiBangla ধূমকেতু নিউজ ম্যাগাজিন

Home » , , , , , » হরতাল-অবরোধ- কৃষির এই ক্ষতি কি সামলে ওঠা যাবে? by শাইখ সিরাজ

হরতাল-অবরোধ- কৃষির এই ক্ষতি কি সামলে ওঠা যাবে? by শাইখ সিরাজ

সারা দেশ থেকে আমার কৃষকবন্ধুরা ফোন করছেন। তাঁদের অবস্থা জানাচ্ছেন। শত শত টন শীতকালীন সবজি খেতেই নষ্ট হচ্ছে। শীতকাল সামনে রেখে যে স্বপ্ন তাঁরা বুনেছিলেন, তা ধূলিসাৎ হয়ে গেছে। মাস দেড়েক আগে আমি ঈশ্বরদীর মুলাডুলি গিয়েছিলাম।
ওই এলাকায় গত কয়েক বছরে শিম চাষে বিপ্লব সূচিত হয়েছে। মুলাডুলি কাঁচাবাজারটি পরিণত হয়েছে দেশের সবচেয়ে বড় শিমের বাজারে। সাধারণত দিনে (অর্থাৎ, যেদিন হরতাল-অবরোধ নেই) বাজারটি পূর্ণ থাকে শত শত ক্রেতা-বিক্রেতার পদচারণ ও বিকিকিনিতে। কিন্তু হরতাল হলে সেদিন বাজারটি থাকে জনশূন্য। খেতের শিম খেতেই বাড়তে থাকে। ওই এলাকার জমির মালিকদের কাছ থেকে জমি লিজ নিয়ে শিমের চাষ করেন ভূমিহীন প্রান্তিক চাষিরা। অনেকেই শিমের চাষ করে কয়েক বছরে ভাগ্যের পরিবর্তন করেছেন। বিভিন্ন জায়গা থেকে ধার-কর্জ, এনজিওর ঋণ ইত্যাদি নিয়ে তাঁরা শিমের চাষ করেন। ফসল উঠলে টাকা পরিশোধ করে লাভের হিসাব কষেন।

এবার তাঁদের সবারই কপাল পুড়েছে। লোকসানের শিকার হয়েছেন অধিকাংশ কৃষক। ওই এলাকার সবচেয়ে বড় কপিচাষি ‘কপি বারি’ বলেন, শীতের সবজি ওঠে প্রতিদিন। এক দিন বাজার ধরতে না পারলে খেতের সবজি খেতেই নষ্ট হয়। কপির ফুলে বীজ হয়ে যায়, মুলা সময়মতো না তুললে মোটা ও শক্ত হয়ে যায়, শিমের ভেতরে বিচি বড় হয়ে যায়—এমন সব ফসলই নষ্ট হয়। পরে আর এগুলো বাজারে বিকোয় না। এবার তা-ই ঘটেছে। অধিকাংশ চাষির খেতের সবজি হরতাল-অবরোধের কারণে তুলতে না পেরে খেতেই নষ্ট হচ্ছে। বেশ কয়েকজন মিলে ট্রাক ভাড়া করে বাজারে পাঠানোর উদ্যোগ নিলেও সেখানে গুনতে হচ্ছে অনেক বেশি ভাড়া, যা তার উৎপাদন ব্যয়ের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়।
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় তিন হাজারের বেশি শসাচাষি রয়েছেন। শুধু হরতাল-অবরোধের কারণে তাঁরা উৎপাদন খরচের অর্ধেক দামেও শসা বিক্রি করতে পারেননি। অনেকেই খেত থেকে শসা তোলেননি শ্রমিক খরচে পুষিয়ে না ওঠার কারণে। যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার ফুল চাষসমৃদ্ধ গদখালীর কয়েক শ চাষি এবারই প্রথম কঠিন দুর্যোগে পড়েছেন। গদখালী বাজারে এই মৌসুমে প্রতিদিন বেচাকেনা হতো ১০ লাখ টাকার ফুল। কিন্তু হরতাল-অবরোধের কারণে সৃষ্টি হয়েছে অচলাবস্থার। পানির দরেও ফুল বিক্রি হচ্ছে না। ইতিমধ্যে কয়েক কোটি টাকার লোকসান গুনেছেন ফুলচাষিরা। টমেটোর চাষসমৃদ্ধ রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার কথা বলি।
গত এক দশকে গোটা উত্তরাঞ্চলে কৃষি-সাফল্যের এক অনন্য নজির স্থাপন করেছেন রাজশাহীর টমেটোচাষিরা। চলতি মৌসুমে গোদাগাড়ীতে তিন হাজার ৩৩৩ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের শীতকালীন টমেটোর চাষ হয়েছে। প্রায় এক মাস আগে জমি থেকে টমেটো তোলা শুরু হয়। কিন্তু গত ২৬ নভেম্বর থেকে চলমান অবরোধে পরিবহন বন্ধ থাকায় ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ বিভিন্ন জেলায় টমেটো সরবরাহ করতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। কৃষি বিভাগসহ স্থানীয় হিসাবে প্রতিবছর রাজশাহীর গোদাগাড়ীর কৃষকেরা প্রায় ৪০০ কোটি টাকার টমেটো বিক্রি করেন। এবার তার চার ভাগের এক ভাগ, অর্থাৎ ১০০ কোটি টাকাও বিক্রি করতে পারবেন কি না সন্দেহ। প্রতিবছর এই সময়ে যেখানে গোদাগাড়ীতে টমেটোচাষিদের মধ্যে উৎসব দেখা যেত, এখন সেখানে বিরাজ করছে চরম হতাশা।
একের পর এক হরতাল-অবরোধ কর্মসূচির কারণে টান পড়েছে শিশুখাদ্যেও। দুধ সরবরাহ বন্ধ থাকায় দেশের সবচেয়ে বড় সমবায়ী প্রতিষ্ঠান মিল্ক ভিটায় প্রতিদিন ক্ষতি হচ্ছে এক কোটি পাঁচ লাখ টাকা। অন্যদিকে, মিল্ক ভিটা থেকে দুধ কেনা বন্ধ থাকায় চরম দুর্যোগে পড়েছেন সমবায়ী খামারিরা। এদিকে চট্টগ্রামের পশ্চিম পটিয়ার শিকলবাহা দুগ্ধপল্লির পাঁচ শতাধিক খামারি তাঁদের প্রতিদিনের উৎপাদিত ৪৮ হাজার লিটার দুধ সরবরাহ করতে না পারায় কয়েক দিন আগে দুধ ঢেলে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এবার আমন মৌসুমের নতুন ধান বাজারে ওঠার সময় দেশের অধিকাংশ জেলায় ধানের দাম ছিল ৭০০ টাকা মণ। কিন্তু টানা অবরোধ-হরতালের প্রভাবে এই দাম কমে দাঁড়িয়েছে ৫০০ টাকা মণ।
এবার আসা যাক কৃষি উপকরণ সরবরাহের অচলাবস্থা প্রসঙ্গে। হরতাল-অবরোধের কারণে দেশের উত্তরাঞ্চলীয় জেলাগুলোয় সার ও ডিজেলের সংকট সৃষ্টি হয়। সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ী নৌবন্দর থেকে উত্তরবঙ্গের ১৬টি জেলায় সার সরবরাহ বন্ধ থাকায় বাঘাবাড়ী বন্দরে খোলা আকাশের নিচে হাজার হাজার টন ইউরিয়া সার পড়ে থাকতে দেখা যায়। কৃষি মন্ত্রণালয়ের হিসাবে দেশে প্রতিবছর সারের গড় চাহিদা ৪৫ থেকে ৪৭ লাখ টন। এর মধ্যে ইউরিয়ার চাহিদা ২৮ থেকে ২৯ লাখ টন। এ ছাড়া টিএসপি ছয় থেকে সাত লাখ ও মিউরেট অব পটাশ (এমওপি) প্রয়োজন হয় বছরে সাড়ে ছয় লাখ টন। এসব সারের ৬৫ শতাংশই প্রয়োজন বোরো মৌসুমে। সাধারণত কৃষকের জন্য সার সরবরাহ করেন বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) ও বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএ) ডিলাররা। এখন দেশের সব এলাকায় বোরো বীজতলা তৈরি ও রোপণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় এবং সারের চাহিদা সর্বোচ্চ। কিন্তু হরতাল-অবরোধের কারণে সার পরিবহন ব্যাহত হচ্ছে। আমদানি করা প্রচুর পরিমাণ সার পড়ে আছে দেশের বৃহত্তম দুই সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রাম ও মংলায়।
টানা অবরোধের কারণে সারা দেশে বিঘ্নিত হচ্ছে জ্বালানি তেল সরবরাহ কার্যক্রম। একই সঙ্গে কমেছে বিক্রিও। নৌপথে সরবরাহ ব্যবসা চালু থাকলেও গত এক মাসে সাপ্তাহিক ছুটির দিন ছাড়া সড়ক ও রেলপথে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধই ছিল বেশি। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের হিসাবে চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গায় অবস্থিত জ্বালানি তেলের প্রধান ডিপো থেকে এক দিনের অবরোধে দেশের ডিপোগুলোয় গড়ে ১৬ থেকে ১৮ হাজার মেট্রিক টন জ্বালানি তেল সরবরাহ বিঘ্নিত হয়। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে সেচনির্ভর বোরো মৌসুমের ওপর।
হরতালের অর্থনৈতিক ক্ষতি নিয়ে অর্থনীতিবিদ ও গবেষকদের নানা রকম হিসাব রয়েছে। কয়েক মাস আগে ঢাকা চেম্বার অব কমার্সের এক হিসাবে দেখা যায়, ‘এক দিনের হরতালে দেশের অর্থনীতিতে যে ক্ষতি হয়, তার পরিমাণ ২০ কোটি ইউএস ডলার বা এক হাজার ৬০০ কোটি টাকা।’ কোনো কোনো অর্থনীতিবিদ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের হিসাবে এক দিনের হরতাল-অবরোধে অর্থনীতির ক্ষতি আড়াই হাজার কোটি থেকে সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত। কিন্তু এই হিসাবগুলো বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অনুমাননির্ভর। এ বিষয় নিয়ে আমি দেশের বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি অকপটেই বলেছেন, হরতাল-অবরোধে কৃষির ক্ষতি ব্যাপক। কিন্তু এই ক্ষতি দিয়ে যুক্তিসংগত ও সামঞ্জস্যপূর্ণ কোনো সংখ্যাতাত্ত্বিক গবেষণা এখনো হয়নি। হরতাল-অবরোধের অর্থনৈতিক ক্ষতি নিরূপণ করার প্রচলিত কৌশলটি জানা গেল তাঁর কাছে। সেটি হচ্ছে, আমাদের এক দিনের জিডিপি এক দিনের ক্ষতি হিসেবে ধরা হয়। এই হিসাবের কাছেও আসে না কৃষকের পণ্য পরিবহন না করতে পারার যন্ত্রণা ও লোকসানের হিসাব। একই সঙ্গে আসে না ঋণগ্রস্ত কৃষকের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করতে না পারা ও লাখ লাখ টাকার লোকসান গোনার হিসাব।
১৫ ডিসেম্বর ব্যবসায়ী সম্প্রদায় সারা দেশে হরতাল-অবরোধ ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছেন। কিন্তু বরাবরের মতোই এখানেও ছিল না কোনো কৃষকের অংশগ্রহণ। দেশের বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ অংশ, হরতাল-অবরোধের সবচেয়ে বড় ক্ষতির শিকার হলেও আজ পর্যন্ত কোনো কৃষক আন্দোলন-সংগ্রামে যাননি। এ অবস্থা চলতে থাকলে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের গর্ব ধরে রাখা যাবে না।
গত দুই মাসে আমাদের পণ্য পরিবহন ও বাজার নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় কোটি কোটি টাকার কৃষিপণ্য পচে নষ্ট হয়েছে। যার মধ্য দিয়ে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গ্রামীণ অর্থনীতি। উপকরণ সরবরাহ স্বাভাবিক রেখে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বোরো আবাদ করতে না পারলে আমাদের শতকরা ৬০ ভাগ খাদ্যনির্ভরতার জায়গাটি সংকটপূর্ণ হয়ে উঠবে। সেখান থেকে উঠে দাঁড়ানো কি সম্ভব হবে?
শাইখ সিরাজ: পরিচালক ও বার্তা প্রধান, চ্যানেল আই।
shykhs@gmail.com

Written by : Nejam Kutubi - Describe about you

"And still even today I hear the mournful tune of the Sanai"Say,Valiant,High is my head!I am the rebel,the rebel son of mother-earth!Ever-high is my head.O travellers on the road of destruction,Hold fast Ur hammer,pick up Ur shovel,Sing in unison And advance.We created in the joy of our arms.We shall now destory at the pleasure of our feet.‘O Lord,For eight years have I lived And never did I say my prayers And yet,did U ever refuse me my meals for thet?Ur mosques And temples are not meant for men,Men heve no right in them.The mollahs And the Priests Heve closed their doors under locks And keys.’Comrades, Hammer away at the closed doors Of those mosques And temples,And hit with Ur shovel mightily.For,climbing on their minarets,The cheats are today glorifying Selfishness And hypocrisy.And creatr a new universe of joy And peace.Weary of struggles,I,the great rebel,Shall rest in quiet only when I find The sky And the air free of the piteous groans of the oppressef.Only when the dattlefields are cleared of jingling bloody sabres Shall I,weary of struggles,rest in quiet,I,the great rebel.I am the rebel-eternal,I raise my head beyond this world,High,ever-erect And alone!.

Join Me On: Facebook | Twitter | Google Plus :: Thank you for visiting ! ::

0 comments:

Post a Comment