Recent News of WikiBangla ধূমকেতু নিউজ ম্যাগাজিন

Home » , , » হরতালের আগুন: মারা গেলেন অগ্নিদগ্ধ আরও দুজন- পুড়ে গেছে তাঁদের সংসারও by কাজী আনিছ

হরতালের আগুন: মারা গেলেন অগ্নিদগ্ধ আরও দুজন- পুড়ে গেছে তাঁদের সংসারও by কাজী আনিছ

পিকআপ ভ্যানে কফিন। কফিনের ভেতরে চিরনিদ্রায় শুয়ে আছেন আসাদুল গাজী। সেদিকে তাকিয়ে ‘বাবা, বাবা’ বলে ডাকছিল সাত বছরের শিশু মাইনুল ইসলাম।
কিন্তু বাবা জাগলেন না। মাইনুলের প্রশ্ন, ‘বাবা কি উঠবে না?’

গতকাল শনিবার রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর মীর হাজীরবাগে এ দৃশ্য উপস্থিত সবাইকে ভাসিয়েছে চোখের জলে। মাইনুল জানে না অভিশপ্ত হরতালের আগুন বাবা সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক আসাদুল গাজীর (৪০) প্রাণ নিভিয়ে দিয়েছে।

হরতালের আগের দিন, ৩ নভেম্বর রাতে সাভার সেনানিবাস এলাকায় আসাদুলের যাত্রীবাহী অটোরিকশায় হরতালকারীরা পেট্রলবোমা ছুড়লে অগ্নিদগ্ধ যাত্রী মোস্তাফিজুর রহমান (৩৫) নিহত হন। এ সময়ই দগ্ধ হন আসাদুল ও মোস্তাফিজুরের সহকর্মী হাসু আহমেদ। তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। টানা ১৩ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে গত শুক্রবার রাত দেড়টার দিকে মারা যান আসাদুল। এর প্রায় ১৮ ঘণ্টা আগে শুক্রবার সকালে হাসপাতালেই  চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আরেকজন অগ্নিদগ্ধ মন্টু পাল (৩৮)। ১০ নভেম্বর সূত্রাপুর থানার লক্ষ্মীবাজারে লেগুনায় পেট্রলবোমায় ঝলসে গিয়েছিল মন্টুসহ পাঁচজনের শরীর।

গত ২৬ অক্টোবর থেকে ১২ নভেম্বর পর্যন্ত হরতালের আগুন, পেট্রলবোমা ও বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় এ পর্যন্ত নিহত হলেন ছয়জন। আসাদুল, মন্টু পাল ও মোস্তাফিজুর ছাড়া এই তালিকায় আছেন পোশাককর্মী নাসিমা আক্তার ও কিশোর মনির হোসেন। আর ‘বোমা বানাতে গিয়ে বিস্ফোরণে’ নিহত হন ফেনীর আবুল কাশেম। এঁরা সবাই হতদরিদ্র। আসাদুল, মন্টু ও মোস্তাফিজুর পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী। আগুনে শুধু তাঁদের মৃত্যু হয়নি, পুড়িয়ে মারছে তাঁদের পরিবারকেও।

বার্ন ইউনিট ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী, ২৬ অক্টোবর থেকে ১২ নভেম্বর পর্যন্ত রাজধানী ও রাজধানীর বাইরে হতাহতের সংখ্যা ৭৬ জন। এর মধ্যে তিনজন প্রতিবন্ধী ও ১৩ জন শিশু-কিশোর। ১৮টি ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন ৩০ জন। তাঁদের মধ্যে তিন শিশু-কিশোরসহ ১৯ জন বর্তমানে বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন।


‘লেখাপড়া করমু কীভাবে?’: ভাগ্য বদলাতে প্রায় ২০ বছর আগে ঢাকা এসেছিলেন আসাদুল। ছিলেন রিকশাচালক। সংসার গড়ার পর খরচ বেড়ে যাওয়ায় ইঞ্জিনচালিত গাড়ি চালনা শেখেন। পাঁচ-ছয় বছর ধরে চালাচ্ছিলেন অটোরিকশা। যাত্রাবাড়ীর মীর হাজীরবাগে স্ত্রী মর্জিনা আক্তার এবং সন্তান তানজিলা আক্তার (১০) ও মাইনুলকে নিয়ে থাকতেন। কিন্তু খরচ সামাল দিতে না পারায় স্ত্রী-সন্তানদের পটুয়াখালীর বাউফলের গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন।

স্বজনেরা জানান, প্রতি সপ্তাহে গ্রামের বাড়িতে হাজার দুয়েক টাকা পাঠাতেন আসাদুল। হরতাল ও অন্য রাজনৈতিক সহিংসতার কারণে আয় কম থাকায় কয়েক সপ্তাহ টাকা পাঠাতে পারেননি। তাই ওই রাতে সাভারের নবীনগরে যাত্রী নিয়ে যাচ্ছিলেন।

গতকাল মীর হাজীরবাগে গিয়ে দেখা যায়, একটি মাদ্রাসার সামনে পিকআপ ভ্যানে কফিনে আসাদুলের লাশ। মাদ্রাসার পাশেই একটি গ্যারেজ থেকে ভেসে আসছিল কান্নার শব্দ। ওই গ্যারেজেই সিএনজি রাখতেন আসাদুল। গ্যারেজে গিয়ে দেখা যায়, এক স্বজনকে জড়িয়ে অঝোরে কাঁদতে কাঁদতে মেয়ে তানজিলা বলছিল, ‘বাবা নাই। লেখাপড়া করমু কীভাবে। সামনে পরীক্ষা দিমু কীভাবে?’। ‘আমার সন্তানদের দেখব কে?’ বলে বিলাপ করেই চলেছেন স্ত্রী মর্জিনা।

 তানজিলা গ্রামের স্থানীয় একটি স্কুলের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী। একই স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ে মাইনুল। সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ তো আছেই, আছে ঋণের বোঝাও। এখন কী করবেন, কী হবে—কিছুই বুঝতে পারছেন না মর্জিনা।


আমি আর বাঁচতে চাই না’: শোকের সাগরে ভাসছেন নিহত মন্টু পালের পরিবারও। পুরান ঢাকার তাঁতীবাজারে একটি স্বর্ণের দোকানের কারিগর মন্টু পাল স্ত্রী সঞ্জু রানী পালকে নিয়ে ফতুল্লার কামালপুর পাগলায় থাকতেন। ১০ নভেম্বর লেগুনায় চড়ে বাসায় ফিরছিলেন। তার পরই পেট্রলবোমায় ঝলসে যায় শরীর। শুক্রবার সকালে মন্টুকে মৃত ঘোষণার পর স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে উঠে বার্ন ইউনিটের পরিবেশ। মেঝেতে গড়িয়ে স্ত্রী সঞ্জুর বিলাপ, ‘আমি আর বাঁচতে চাই না।’

তিন বছর আগে জন্মের সময় মন্টু দম্পতির সন্তান মারা যায়। এখন সঞ্জু রানীর আর কেউ রইল না। টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের ফতেহপুর ইউনিয়নে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে শুক্রবার রাত ১২টার দিকে মন্টুর লাশ গোড়াকী শ্মশান ঘাটে দাহ করা হয়।


ছবির ফ্রেমে কান্নার জল: ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কালিয়াকৈর বাজার থেকে প্রায় সাত কিলোমিটার দূরে বড় কাঞ্চনপুর গ্রাম। টিনশেড ঘরের উঠোনে একটি ছবির দিকে তাকিয়ে বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন মনোয়ারা বেগম। মনোয়ারা হতভাগা কিশোর মনির হোসেনের (১৫) মা। মনির স্থানীয় একটি স্কুলে পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ত। চিকিৎসা ও বেড়ানোর জন্য কাভার্ড ভ্যানচালক বাবা রমজান আলীর সঙ্গে বের হয়েছিল সে। ফিরল লাশ হয়ে। হরতালের দিন ৪ নভেম্বর গাজীপুর চান্দনা চৌরাস্তায় রমজান আলীর কাভার্ড ভ্যানে আগুন দেওয়া হয়। অগ্নিদগ্ধ হয় ঘুমন্ত মনির। ৭ নভেম্বর ভোর চারটার দিকে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে মারা যায় সে।

গতকাল বিকেলে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, মনিরের ছবি হাতে স্মৃতিচারণা করে চোখের জল ঝরাচ্ছেন মা মনোয়ারা। আর কেবলই বলছেন, ‘আমার ছেলেরে যারা আগুন দিয়া পুইড়া মারছে তাগো বিচার চাই।’


সংসারও পুড়ে ছাড়খার হয়ে গেছে’: হরতালের আগুনে শুধু মোস্তাফিজুর রহমান নন, পুড়ে গেছে তাঁর সংসারও। তাঁর মৃত্যুতে দুই সন্তান নিয়ে চোখে অন্ধকার দেখছেন স্ত্রী বিনা সুলতানা। আছেন অজানা আশঙ্কায়। গতকাল সাভার নবীনগরের বাসায় গেলে প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘আগুনে শুধু স্বামীকে হারাইনি, সংসারও পুড়ে ছারখার হয়ে গেছে।’

৩ নভেম্বর পুরান ঢাকা থেকে মালামাল কিনে নিহত আসাদুল গাজীর অটোরিকশায় চড়ে নবীনগরের বাসায় ফিরছিলেন মোস্তাফিজুর ও সহকর্মী হাসু। পেট্রলবোমায় গুরুতর দগ্ধ হয়ে মারা যান তিনি। কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে গ্রামের বাড়িতে তাঁকে দাফন করা হয়।

স্বজনেরা জানান, মোস্তাফিজুর দম্পতির দুই মেয়ে মাহিম মোস্তাফিজ (৬) এবং মৌসুমী মোস্তাফিজ (৩)। মাহিম সাভার সেনানিবাস এলাকার ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড বালিকা বিদ্যালয়ের নার্সারির ছাত্রী। সন্তানের লেখাপড়া ও সংসার খরচ তো ছিলই, নিজের বাবা-মায়ের খরচও পাঠাতেন মোস্তাফিজুর। ভবিষ্যতের জন্য কোনো সঞ্চয় ছিল না তাঁর। কাঁদতে কাঁদতে বিনা বলেন, ‘এখন দুই সন্তান নিয়ে আমি কী করব, কোথায় যাব জানি না।’


মুক্তিযোদ্ধা পরিবারে শোকের ছায়া: সাত সন্তান নিয়ে অভাবের সংসার ছিল মুক্তিযোদ্ধা সফিজ উদ্দিনের। অভাবের কারণে ২০০৫ সালে বিনা চিকিৎসায় মারা যান তিনি। অভাব-অনটনে ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে পরের বছরই ঢাকা এসেছিলেন সফিজের মেয়ে নাসিমা বেগম। কাজ নেন পোশাক কারখানায়। ২৬ অক্টোবর রাতে মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধে বাসে হরতালকারীদের দেওয়া আগুন কেড়ে নিয়েছে তাঁর জীবন। ১৪ নভেম্বর মারা যান নাসিমা।


গতকাল বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার আরজি কালিকাপুরে নাসিমার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় শোকের মাতম। ৭০ বছর বয়সী নাসিমার মা জহুরা খাতুন কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন, ‘একটু সুখ দেয়ার লাইগ্যা ঢাকা যাইয়া মোর মায় লাশ অইয়া গ্রামে ফিইররা আইল। মোগো গরিবগো মাইররা যারা রাজনীতি করে ও আল্লাহ তুই তাগো বিচার করিস।’

২০০২ সালে পাশের উপজেলার মানিক সরদারের সঙ্গে নাসিমার বিয়ে হয়েছিল। মানিক দ্বিতীয় বিয়ে করায় বাবার বাড়িতে ফিরে আসেন নাসিমা। কিন্তু নাসিমার আর জীবনই থাকল না।

নাসিমার বাবা সফিজের দুই ভাইও মুক্তিযোদ্ধা। চাচা শামসুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘যে স্বপ্ন নিয়ে জীবন বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছিলাম, স্বাধীনতার পর কিছুই পাইনি। বরং হারাতে হলো অনেক কিছু। জীবন-জীবিকার তাগিদে সন্তানেরা নিরাপত্তাহীনতায় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের প্রতিহিংসার বলি হলো আমাদের মেয়ে নাসিমা।’


প্রতিবেদন তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন সাভার প্রতিনিধি; বরিশাল গৌরনদী প্রতিনিধি; গাজীপুর প্রতিনিধি ও টাঙ্গাইল মির্জাপুর প্রতিনিধি।

Written by : Nejam Kutubi - Describe about you

"And still even today I hear the mournful tune of the Sanai"Say,Valiant,High is my head!I am the rebel,the rebel son of mother-earth!Ever-high is my head.O travellers on the road of destruction,Hold fast Ur hammer,pick up Ur shovel,Sing in unison And advance.We created in the joy of our arms.We shall now destory at the pleasure of our feet.‘O Lord,For eight years have I lived And never did I say my prayers And yet,did U ever refuse me my meals for thet?Ur mosques And temples are not meant for men,Men heve no right in them.The mollahs And the Priests Heve closed their doors under locks And keys.’Comrades, Hammer away at the closed doors Of those mosques And temples,And hit with Ur shovel mightily.For,climbing on their minarets,The cheats are today glorifying Selfishness And hypocrisy.And creatr a new universe of joy And peace.Weary of struggles,I,the great rebel,Shall rest in quiet only when I find The sky And the air free of the piteous groans of the oppressef.Only when the dattlefields are cleared of jingling bloody sabres Shall I,weary of struggles,rest in quiet,I,the great rebel.I am the rebel-eternal,I raise my head beyond this world,High,ever-erect And alone!.

Join Me On: Facebook | Twitter | Google Plus :: Thank you for visiting ! ::

0 comments:

Post a Comment